অবশেষে বিনিময় হারে আরও নমনীয়তা আনার বিষয়ে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ফলে আইএমএফ আগামী জুন মাসে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ ছাড় করতে সম্মত হয়েছে। এই অর্থ ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের অংশ, যার বিতরণ আগে স্থগিত ছিল।
বিনিময় হার নমনীয়তার আওতায় ‘ক্রলিং পেগ’ ব্যবস্থার বাস্তবায়ন নিয়ে আগে যে মতবিরোধ ছিল, তা এখন সমাধান হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দেওয়া হবে। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি এতে অংশ নেবেন। এর আগে, আইএমএফ-এর একটি মিশন গত ৬ থেকে ১৭ এপ্রিল ঢাকা সফর করেন। তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি পর্যালোচনা করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আইএমএফ শুরু থেকেই একটি বাস্তব অর্থে নমনীয় বিনিময় হার চেয়েছিল, যা শুধু সীমিত পরিসরের পরিবর্তন নয়, বরং একাধিক বিনিময় হারের ব্যবস্থা বাতিল করাকে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা থেকে কিছুটা সতর্ক অবস্থানে ছিল। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ডলার ছাড় করেছে। ফেব্রুয়ারিতে ঋণের চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় নিয়ে আলোচনা ভেস্তে গেলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায় যে ঋণের কিস্তি ছাড়ের শর্তসমূহ পূরণে সময় লাগছে বলেই বিলম্ব হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই কিস্তিগুলো এমন কিছু শর্তের সঙ্গে যুক্ত, যা বাংলাদেশ সরকার এবং আইএমএফ যৌথভাবে অর্থনীতির ভিত্তি মজবুত করতে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে কিছু শর্ত বাস্তবায়নে সময় প্রয়োজন। তাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে নির্ধারিত দুটি কিস্তি একত্রে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইএমএফ এই সম্মিলিত চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ে সম্মতি দিয়েছে।
এপ্রিল মাসে পর্যালোচনা সন্তোষজনক ভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর এবং আইএমএফ বোর্ডের অনুমোদন পাওয়ায় জুনে এই অর্থ ছাড় হবে।