নারায়ণগঞ্জ সিটির সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. রিপন মৃধা বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। মামলায় ৫২ জনকে এজাহারনামীয় এবং ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। সেসঙ্গে এ মামলায় রাতে অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন-নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার শহীদনগরের মো. হানিফের ছেলে মোহাম্মদ জিসান (২৮), কাশেমের ছেলে হানিফ (৪০) ও আবদুল হাইয়ের ছেলে শওকত মিখুন (৪৩)। মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন-নারায়ণগঞ্জ সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাবু, সিদ্ধিরগঞ্জ যুবলীগের কামরুল হুদা বাবু, শফিকুল ইসলাম লিটন, মাইনউদ্দিন আহমেদ রাসেল, কবির হোসেন, জামির হোসেন রনি ও মোতালেব হোসেন মাস্টারসহ ৫২।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, এজাহারনামীয় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় পাঁচটি হত্যা এবং হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। এরমধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের করা মিনারুল ইসলাম নামের এক পোশাক শ্রমিক হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আইভীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার সমর্থকদের বাধার মুখে পড়তে হয়।
পরে আইভীর বাড়িতে প্রবেশ করে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী, হাসিনুজ্জামান, ওসি নাসির উদ্দিন আহমেদ ও ওসি শাহিনুর আলমসহ পুলিশের কয়েকজন সদস্য রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক স্লোগান দেন ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। পরে আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় শহরের উকিলপাড়া মোড়ে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ৯ মে ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার বাসভবন চুনকা কুটির থেকে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনউদ্দিন কাদিরের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।