পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছে মানুষ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে ঢাকা ছাড়ছে গ্রামের উদ্দেশে। ফাঁকা হতে শুরু করেছে রাজধানী ঢাকা। কয়েক দিন ধরে ঈদযাত্রা শুরু হলেও গতকাল থেকে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় বেড়েছে। কমলাপুর রেলস্টেশন, গাবতলীতে বিভিন্ন বাস কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। গতকালও বেশ কয়েকটি ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব করায় ভোগান্তি হচ্ছে যাত্রীদের। গত কয়েকবারের মতো এবারও লঞ্চঘাটে যাত্রীর চাপ লক্ষ করা যায়নি। আর আজ শুরু হবে বাড়িমুখী মানুষের স্রোত। বৃহস্পতিবার থেকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু হলেও বাড়ি ফেরা শুরু হয়েছে বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই।
রাজধানীর গাবতলী ও মাজার রোড এলাকায় গতকাল বিভিন্ন বাস কাউন্টারে গিয়ে যাত্রীর চাপ লক্ষ করা গেছে। ঈদ উপলক্ষে অগ্রিম টিকিট বিক্রি হওয়ায় নির্ধারিত আসনের বাইরে খুব বেশি যাত্রীর দেখা মেলেনি। তবে গতকালও অনেককে অগ্রিম টিকিট খুঁজতে দেখা গেছে। গত ১৬ মে থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ায় ইতোমধ্যে প্রায় সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। গতকাল মাজার রোডে নাবিল পরিবহনের কাউন্টারে কথা হয় যাত্রী আসাদুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি দুপুরে দিনাজপুরের উদ্দেশে রওনা করেন। যথা সময়ে বাস ছাড়লেও কোরবানির পশুর হাটের কারণে গাবতলী পার হতেই প্রায় আধা ঘণ্টা লাগার কথা জানান তিনি।
জানা গেছে, ঈদযাত্রা উপলক্ষে ঢাকা-আশুলিয়া ও ঢাকা-গাজীপুর সড়কে পরিবহনের চাপ বেড়েছে। এতে বাড়ি ফেরা মানুষের যানজট ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে যানজট নিরসনে মহাসড়কে কাজ করছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা। যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে চন্দ্রা এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। ছিনতাইকারী, ডাকাত ও মলম পার্টির সদস্যদের হাতে যেন যাত্রীরা কোনোরকম হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
দুপুরে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের তুলনায় ভিড় বেড়েছে প্ল্যাটফর্মে। ঈদযাত্রা স্বাচ্ছন্দ্য করতে রেলস্টেশনে বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্ল্যাটফর্মের বাইরে বেষ্টনী দিয়ে বিনা টিকিটের যাত্রী ঠেকানোর ব্যবস্থা নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কমলাপুর স্টেশনে গতকাল কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী এমদাদ হকের সঙ্গে। তিনি জানান, ঈদের নির্ধারিত ছুটির সঙ্গে বাড়তি ছুটি নিয়ে আগেভাগেই গ্রামের বাড়ি নাটোরের উদ্দেশে রওনা করছেন তিনি। পরিবার নিয়ে যাতায়াতের জন্য তুলনামূলক স্বাচ্ছন্দ্যের হওয়ায় ট্রেনেই যাত্রা করেন তিনি।
ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া আন্তনগর ট্রেনগুলোর জন্য ৩৩ হাজার ৩১৫টি আসন নির্ধারিত রয়েছে। ঈদ-পরবর্তী রেলে ফিরতি যাত্রা শুরু হবে ৯ জুন। আজ বিক্রি হবে ১৪ জুনের ফিরতি ট্রেনের টিকিট। আর আগামীকাল পাওয়া যাবে ১৫ জুনের অগ্রিম ট্রেনের টিকিট।
রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখী মানুষের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। আগাম টিকিট বিক্রিতেও ছিল না প্রত্যাশিত সাড়া। লঞ্চগুলোর বেশির ভাগ কেবিনের টিকিটও বিক্রি হয়নি বলে জানা গেছে। সদরঘাট থেকে সবচেয়ে বেশি যাত্রী যায় বরিশাল রুটে। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সড়কপথে যাত্রা অনেক সহজ হয়েছে। ফলে নৌপথে যাত্রীসংখ্যা অনেক কমে গেছে।