প্রবাসে ঈদ মানেই ভিন্ন এক অনুভূতি। ঈদের খুশি আসে; কিন্তু প্রবাসে যেন সে খুশিও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। হাজার মাইল দূরে বসবাস করে দেশে থাকা প্রিয়জনদের স্মৃতি যেন ঈদের সকালে আরও বেশি করে তাড়া করে ফেরে প্রবাসীদের।
গ্রিসের এথেন্সের ওমোনিয়া এলাকার এক বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টে ঈদের দিন দেখা গেল কয়েকজন প্রবাসী একসঙ্গে বসে ভিডিও কলে পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন। চোখে আনন্দের জল। মুখে হাসি আর হৃদয়ে ব্যথা- এ যেন প্রবাসের ঈদ। আলাপচারিতায় গ্রিস প্রবাসী রফিকুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে ১০টা ঈদ কাটালাম পরিবারের বাইরে। সকালে উঠে আব্বা-আম্মার জন্য দোয়া করি। নামাজ পড়ে চোখ ভিজে যায়। জুবায়ের আহমেদ বলেন, কোনো কোনো বছর ঈদের দিনটাতেও কাজে থাকতে হয়। ফোনে মা কান্না করে। বলে- তুই কি ঈদের নামাজ পড়লি? আমি চুপ করে থাকি। প্রবাসে ঈদের দিনটা মনে হয় আরও একা করে দেয় মানুষকে। গ্রিসের একটি দ্বীপে রেস্টুরেন্টে কাজ করেন অলিউর রহমান।
তিনি এবার রাজধানী এথেন্সে বাংলাদেশিদের সঙ্গে প্রথম ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। অলিউর বলেন, গ্রিসে হাজারো মানুষের মাঝে থেকেও ঈদের দিন নিজেকে একা লাগে। আমি এমন এক জায়গায় থাকি সেখানে কেউ সকালে এসে জড়িয়ে ধরে বলে না ‘ঈদ মুবারক’। ঈদের জামাতে অনেক বাংলাদেশি নারীও অংশ নেন। নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। পর্তুগাল প্রবাসী তন্নী আক্তার নামের এক নারীর সঙ্গে কথা হয়।
তিনি এক বছর আগে পারিবারিক ভিসায় পর্তুগালে এসেছেন। গ্রিসে আত্মীয়স্বজন আছেন। তাই তাদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গ্রিসে আসেন। তন্নী বলেন, নারী হয়ে প্রবাসে থাকা এমনিতেই কঠিন। ঈদের দিন আরও কষ্ট লাগে। ৬ জুন (শুক্রবার) গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের বোটানিতে সরকার অনুমোদিত মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশিদের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন মসজিদে তিন থেকে চার ধাপে জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে।
এথেন্স সরকারি জামে মসজিদ ও মাঠে বিভিন্ন দেশের নারী ও কিশোরী মুসলিম প্রবাসীরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। এখানে বড় পরিসরে মসজিদের ভিতর এবং বাইরে পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের জন্য আলাদা আলাদাভাবে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল। পরপর কয়েকটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ কমিউনিটি ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা নামাজ শেষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।