রাজধানীসহ দেশজুড়ে গতকাল হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের এ ধারা আগামী সপ্তাহজুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা বলেছে, আজ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় পাঁচ জেলায় ভূমিধসসহ ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে তারা। এতে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
গতকাল প্রকাশ করা আগামী শনিবার পর্যন্ত চার দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে আজ দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (১৮৮ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলাগুলোর পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ৯ থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
শুক্রবার ও শনিবারও একই ধরনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে বলা হয়েছে বৃষ্টিপাতের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
দিনভর বৃষ্টিতে খুলনায় জলাবদ্ধতা : নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা জানায়, দিনভর বৃষ্টিতে গতকাল অলিগলি ডুবে যায় খুলনা নগরীর মূল সড়কসহ। বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে অনেক এলাকায় সড়কের পাশে বাড়িঘর, দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়ে। রাস্তাঘাট তলিয়ে সড়কে চলাচলরত যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বন্ধ হয়ে যায়। এতে স্থবির হয়ে পড়ে নগরজীবন। বৃষ্টির কারণে গতকাল খুলনা নগরীতে যানবাহনের চাপও ছিল কম। গণপরিবহন, রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা কম থাকায় অনেককে বাড়ি ফিরতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নগরীর আহসান আহমেদ রোডে কোচিং সেন্টার, ল-চেম্বার, চায়ের দোকান, বেকারি ও ছবি তোলার স্টুডিওর দোকানিদের দোকানের ভিতরের পানি সেচতে দেখা যায়। অভিযোগ রয়েছে, সংস্কারের নামে বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা ড্রেন উঁচু করা হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়। সিটি করপোরেশন প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছে। কিন্তু জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মেলেনি। খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, কেডিএর সড়ক নির্মাণকাজে লবণচরা ও মতিয়াখালি ড্রেনের পানি রূপসা নদীতে নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে রূপসা লবণচরা, মোল্লাপাড়া, মহিবাড়ি খালপাড়, জিন্নাহপাড়া, দারোগা পাড়াসহ আশপাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে কেসিসির চলমান ড্রেনেজ প্রকল্প শেষ হলে জলাবদ্ধতার সংকট কাটবে বলে জানান তিনি।