‘মব’ তৈরি করে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে লাঞ্ছনার ঘটনায় হানিফ নামে একজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এরপর তাকে উত্তরা পশ্চিম থানায় সোপর্দ করা হয়। গতকাল তাকে আদালতে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের ডিসি মো. মহিদুল ইসলাম। সোমবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি দল রাজধানীর উত্তরা থেকে হানিফকে আটক করে। ডিসি মহিদুল ইসলাম জানান, হানিফ মিয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত অন্যদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। যারা অতি উৎসাহী হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এ ধরনের ‘মব জাস্টিস’ দমন করতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। জানা গেছে, হানিফ উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব।
রবিবার উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে বের করে আনে। জুতার মালা পরিয়ে তাঁকে হেনস্তা করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। জুতা দিয়ে নূরুল হুদাকে আঘাত ও ডিম নিক্ষেপের ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘটনার সময় সেখানে পুলিশ উপস্থিত ছিল। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, দিনের ভোট রাতে করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানায় বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন খানের করা মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলায় সোমবার নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।
এদিকে, ঘটনার পরপরই সরকারের প্রেস উইং থেকে বিবৃতিতে জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট মামলায় পুলিশ সিইসি নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু গ্রেপ্তারের সময় যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এবং লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি, যা আইনের শাসনের পরিপন্থি এবং ফৌজদারি অপরাধের শামিল। দেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি অপরাধীও হন, তার বিচার হবে আইন অনুযায়ী, আদালতের মাধ্যমেই। এ ঘটনায় সরকারের নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। মব সৃষ্টিকারী ও লাঞ্ছনায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।