চট্টগ্রামে টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক দেবে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আর এতে একটি ব্রিজ ধসে পড়েছে। চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেট-অক্সিজেন সড়কের শীতল ঝরনা খালের ওপর নির্মিত স্টারশিপ ব্রিজটি দেবে গেছে। গত বুধবার দিবাগত রাতে ভারী বর্ষণে পানির ঢলে ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গতকাল ভোরে ব্রিজের দুই পাশ থেকে মাটি সরে গিয়ে সড়ক দুই ভাগ হয়ে যায়। ফলে গতকাল থেকে সড়কটির একপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বিপাকে পড়েছে মানুষ। চসিক মেয়র গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ছাড়াও টানা বর্ষণে নগরের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। নগরের মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ, কাতালগঞ্জ, ওয়াসা মোড়, জিইসি, চকবাজার, বাদুড়তলা, জামালখান বাই লেইন, আসকারদীঘির পাড়ের নিচু অংশ, আগ্রাবাদ, হাজীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার কোথাও হাঁটুসমান, কোথাও কোমর পানি জমে যায়। নগরের বহদ্দারহাটে কয়েকটি মার্কেটের নিচ তলার সব দোকানপাট পানিতে ডুবে যায়। তবে পানি বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি থাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। চসিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮০ সালে শীতল ঝরনা খালের ওপর একটি ব্রিজ নির্মিত হয়। সম্প্রতি জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খাল প্রশস্ত করার কারণে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ঝুঁকির বিষয়টি স্থানীয়রা চসিককে জানায়। পরে চসিক শুধু টিন দিয়ে ঘেরাও দিয়েছিল এবং দেবে যাওয়া জায়গায় বালু-ইটের টুকরা দিয়ে কোনোরকম গর্ত ভরাট করে। সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে সড়কের এক পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। সড়ক ভেঙে যাওয়ায় লাল ফিতা দিয়ে বেষ্টনী তৈরি করে রাখা হয়েছে। সড়কের একাধিক জায়গায় ফাটল ধরে দেবে গেছে। দেবে যাওয়া অংশে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়। চারপাশ বেঁধে দেওয়া হয় লাল ফিতা দিয়ে। ধীরগতিতে যান চলাচলের কারণে অক্সিজেন-২ নম্বর গেইট সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ও নাজিরহাট রুটে ট্রেন চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে। চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রবল বর্ষণে পানির ঢলে ব্রিজের নিচের মাটি সরে যাওয়ায় ব্রিজটি দেবে যায়। এটি ৪৫ বছর আগের ২০ ফুটের একটি ব্রিজ। এখন এটাকে আমরা ৬০ ফুটের করব। জলাবদ্ধতা প্রকল্পটি চলার কারণে এখানকার অন্য কাজগুলো হয়নি। দ্রুতই ব্রিজটি করার উদ্যোগ নেব।
ডুবছে সীতাকুণ্ড : কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়। একই সঙ্গে আশ্রয়ণ প্রকল্পের শতাধিক ঘরবাড়ি কোমরপানিতে ডুবে যায়। ফলে শিশু, বৃদ্ধসহ হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।