হাবিবসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরায় একটি ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা এক ছাত্রকে গুলি এবং দুজনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছে প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর ফারুক আহমেদ ও সাইমুম রেজা তালুকদার। বাকি চার আসামি হলেন ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান, রামপুরা থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকার। পাঁচ আসামির মধ্যে শুধু চঞ্চল গ্রেপ্তার আছেন। বাকিরা পলাতক। অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আমির হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী জুমার নামাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় তিনি রামপুরা এলাকায় তার বাসার কাছাকাছি পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে পড়ে যান। এ সময় পুলিশ গুলি চালাতে শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে আমির দৌড়ে আশ্রয় নেন নির্মাণাধীন ভবনের চার তলায়। বিক্ষোভকারীদের পিছু নিতে পুলিশও ওই ভবনের চার তলায় উঠে যায়। পুলিশ সদস্যরা তার দিকে অস্ত্র তাক করে বারবার নিচে লাফ দিতে বলে। এক পুলিশ সদস্য তাকে কয়েক রাউন্ড গুলিও করে। ভয়ে আমির লাফ দিয়ে ভবনের রড ধরে ঝুলে পড়েন। তখনই তৃতীয় তলা থেকে এক পুলিশ সদস্য তার পায়ে ছয়টি গুলি করে। পুলিশ চলে গেলে দুই পা রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি ঝাঁপ দিয়ে তৃতীয় তলায় পড়েন। ঘটনার প্রায় ৩ ঘণ্টা পর এক শিক্ষার্থী ও দুজন চিকিৎসক তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। রামপুরায় ওই একই দিন ঘটনাস্থলের কাছে আরও দুজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনকে গুলি করার অভিযোগে এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গত ২৮ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এর দুই দিন আগে ২৬ জানুয়ারি রাতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি টিম।