রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আশপাশে ১৫৮টি অপরিকল্পিত ভবন রয়েছে, যা করা হয়েছে পুরোপুরি অবৈধভাবে। এসব স্থাপনা বিমান চলাচলকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। গতকাল রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ‘বাংলাদেশে বিমানচালনা নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন এভিয়েশন খাতের সাবেক ও বর্তমান বিশেষজ্ঞরা। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কাজী ওয়াহিদুল আলম। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাবেক এয়ার ডিফেন্স পরিচালক এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী, সাবেক বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত কমিটির প্রধান ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এম রহমানুল্লাহ (অব.) এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাবেক সদস্য এয়ার কমোডর এ কে এম জিয়াউল হক, বিমানবাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিমানের চিফ অব টেকনিক্যাল ক্যাপ্টেন তানভীর খুরশিদ, স্থপতি ও নগর বিশেষজ্ঞ ইকবাল হাবিব, এভিয়েশন ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি তানজিম আনোয়ার, নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোফিজুর রহমান, নজরুল ইসলাম, এয়ার এস্ট্রোর সিইও ইমরান আসিফ, ডা. আবু হোসাইন মো. মঈনুল আহসান, ইউএস বাংলার নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ক্যাপ্টেন শামসুজ্জামান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাবেক পরিচালক ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম, সাবেক বিমান প্রশিক্ষক সোহেল রানা প্রমুখ।
আলোচনায় এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা জমি পাওয়া। এই দেশ একসময় ৭ কোটির ছিল, এখন ২২ কোটির। বন কেটে, শহর ভেঙে তারা এখন বসত গড়ছে। বাংলাদেশ এত ধনী নয়। নতুন বিমানবন্দর করার জায়গা তো নেই। রাজধানীর বর্তমান জনঘনত্ব বড় চ্যালেঞ্জ।’ ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এম রহমানুল্লাহ (অব.) বলেন, ‘১৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা আছে শাহজালাল বিমানবন্দরের আশপাশে। যেগুলোর জন্য বিমানের ওঠানামা করতে অসুবিধা হয়। এসব স্থাপনা কী করে হয়েছে, কেন হয়েছে? কারা অনুমতি দিয়েছে?’ এ কে এম জিয়াউল হক বলেন, ‘বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য সমঝোতা স্মারক করার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু দুর্যোগ মোকাবিলায় এখনো প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে।’ এ মুহূর্তে ৩০০ যাত্রী নিয়ে কোনো ইমারজেন্সি ঘটলে কী করব? সে প্রস্তুতি কি আমাদের আছে? প্রশ্ন রাখেন তিনি। শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় এরকম একটি এয়ারপোর্ট করা ঠিক কি না? এ প্রশ্ন ৩০ বছর আগের। যখন কুর্মিটোলায় এয়ারফোর্স অ্যাভিয়েশন করা হচ্ছিল তখন তো সেখানে এখনকার মতো ঘনবসতি ছিল না। এসব ঘনবসতি কীভাবে হয়েছে সেটা নিয়ে কজন ভেবেছে? নিজের স্বার্থে আগাচ্ছি সবাই। জাতীয় স্বার্থ কেউ দেখছি না।’ আর নভোএয়ারের এমডি মফিজুর ইসলাম বলেন, ‘মাইলস্টোন দুর্ঘটনা আমাদের জীবনে দেখা অন্যতম ট্র্যাজেডি। আর যেন এমন না হয়, সে প্রস্তুতি থাকা জরুরি।’