নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫ মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার-ভিডিপি ও সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। প্রতিটি পূজামণ্ডপ সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রাখা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি রয়েছে চার স্তরে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করে কি না, তা কঠোরভাবে নজরদারি করা হবে। এবারের দুর্গাপূজা ঘিরে নাশকতার কোনো শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূজা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের জন্য ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা, পুণ্যার্থী, দর্শনার্থী, পূজা উদযাপন কমিটিসহ সাধারণ জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। পূজার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) চালু করা হয়েছে। এই অ্যাপের সহায়তায় যে কোনো ঘটনা ঘটলে এর তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকারের কাছে চলে আসবে। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ অথবা নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্গাপূজা উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে নিরাপদে নির্বিঘ্নে উদযাপিত হবে।
এরই মধ্যে সারা দেশে সব মণ্ডপে ৭১ হাজার ৬৬ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ২ লাখের বেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকা এবং রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের পূজামণ্ডপের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে বিজিবির ৪৩০ প্লাটুন সদস্য। র্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়নকে পূজা উপলক্ষে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করেছে। প্রায় ৯ হাজার র্যাব সদস্য সারা দেশের পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় কাজ করছে। এ ছাড়া প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পূজা উদযাপন কমিটি।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি মাসের শুরু থেকে অল্প কয়েকটি স্থানে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে এসব ঘটনা প্রশমিত বা প্রতিকার করা হয়েছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আনসার-ভিডিপি সদর দপ্তরে বাহিনীটির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী এবার ৭ হাজার ৫৪টি পূজামন্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ১০ হাজার ৯৭২টি এবং কম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ১৩ হাজার ৫৫০টি পূজামন্ডপকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই বিষয়টি বিবেচনা করেই আমরা ২ লাখ আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করেছি।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজার নিরাপত্তা পরিদর্শনে গিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, রাজধানীর ২৫৯টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অধিক ঝুঁঁকিপূর্ণ হওয়ায় রাজধানীর ৮৯টি পূজামণ্ডপে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হবে।