পটুয়াখালীর বহুল আলোচিত জুলাই শহীদ জসিম উদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে লামিয়া আক্তার দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় তিন আসামির মধ্যে দুজনকে ১৩ বছর এবং একজনকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সকালে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিলুফার শিরিন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে উল্লেখ করা হয়, দণ্ডপ্রাপ্তরা অপ্রাপ্তবয়স্ক। ফলে শিশু আইনের আওতায় তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আসামি মো. সাকিব মুন্সী ওরফে সাকিব আল হাসান, সিফাত মুন্সী ও ইমরান মুন্সী এই তিন কিশোরকে ধর্ষণ মামলায় ১০ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া পর্নোগ্রাফি আইনে মো. সাকিব মুন্সী ওরফে সাকির আল হাসান এবং সিফাত মুন্সীকে আরও তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় দুমকী উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানি গ্রামে শহীদ জসিম উদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে লামিয়া আক্তার (১৭) নানাবাড়ি যাওয়ার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। ঘটনার পর সে নিজেই বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে দুমকী থানায় মামলা করে। তদন্ত শেষে পুলিশ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।
ধর্ষণের ঘটনার পর মানসিক আঘাত সইতে না পেরে লামিয়া ওই বছরের ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করে। পরে তার মৃতদেহ নিজ গ্রামে এনে শহীদ বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়। মোট ১৬ জন সাক্ষীর দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ, জেরা ও যুক্তিতর্ক শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাধারণ মানুষ, নারী অধিকারকর্মী ও মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। জসিম হাওলাদার ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই আন্দোলন চলাকালে ঢাকার মোহাম্মদপুরে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে ১০ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।