ত্বকের সবথেকে খারাপ এবং যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা হল ব্রণ। যতই যা করা হোক না কেন, কখনই পুরোপুরিভাবে ব্রণ সারানো যায় না। ফলে বারবার ফিরে আসে এই দুঃসহ যন্ত্রণা। কিন্তু ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিতে সফলতার সঙ্গে এই ত্বকের রোগের চিকিৎসা সম্ভব। এক্ষেত্রে যে যে উপাদানগুলি বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে, সেগুলি হল-
১.বেকিং সোডা:
বেকিং সোডা ব্রণ বা অ্যাকনে সারিয়ে তুলতে দারুণভাবে কাজে দেয়। এমনকি ভবিষ্যতে যাতে ব্রণ ফিরে না আসে তারও চিরতরে ব্যবস্থা করে বেকিং সোডা। এছাড়াও কোনো কারণে ত্বকে প্রদাহজনিত সমস্যা হলে তাও ঠিক করে তুলতে পারে।
২.লেবুর রস:
লেবুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিড বা ক্ষার জাতীয় উপাদান থাকে। ফলে এটি প্রাকৃতিক ক্লিঞ্জার হিসাবে কাজ করতে পারে। সূর্যের আলোতে খতিগ্রস্থ ত্বক থেকে পোড়া ছোপ ছোপ দাগ যেমন দূর করতে পারে, তেমনই ত্বকের রোমগ্রন্থির মুখ উন্মুক্ত করে দিতেও সাহায্য করে লেবুর রস। লেবুর রস একটি প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিঞ্জেন এবং এতে প্রচুর পরিমাণে জীবাণুনাশক উপাদান উপস্থিত রয়েছে।
৩.আলু:
আলুর মধ্যে প্রদাহজনিত সমস্যা নিবারণের ক্ষমতা রয়েছে। এর ফলে ত্বকে কোনোরকম জ্বালা, পোড়া বা কোনোরকমের সংক্রমণ হলে তা সারাতে আলু দারুণ কাজ দেয়।
৪.ভিনিগার:
ব্রণ এবং ফুসকুড়ির মতো সমস্যাকে খুব সহজেই সারিয়ে তুলতে পারে আপেল সিডার ভিনিগার। কারণ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে জীবাণুনাশক উপাদান থাকে। সেই সঙ্গে থাকে ম্যালিক অ্যাসিড, যা প্রায় সব ধরনের জীবাণু এবং ছত্রাকের সঙ্গে লড়তে পারে। এর ফলে ত্বকে ব্রণ বা অ্যাকনের মতো সমস্যাগুলি দূর হয়। খাদ্যগ্রহণের পর আপেল সিডার ভিনিগার পান করলে এর মধ্যে উপস্থিত অ্যাসেটিক অ্যাসিড রক্তে শর্করার মাত্রা সঠিক থাকে। তবে মনে রাখতে হবে যে, যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি অথবা হাইব্লাড প্রেশারে ভুগছেন, তাদের ব্রণ বা ফুসকুড়ি হওয়ার সমস্যা অনেক বেশি হয়।
৫.বরফ:
বরফ কতটা ঠাণ্ডা, সেটা নিশ্চয় কাউকে বুঝিয়ে বলতে হবে না। এর এই অতি ঠাণ্ডা চরিত্রই নানা ধরনের ত্বকের রোগ সারাতে সাহায্য করে। আসলে বরফ ত্বকের রক্তনালীকে সংকুচিত হতে সাহায্য করে। ফলে প্রদাহজনিত সমস্যা হতে পারে না। সেই সঙ্গে বরফ ত্বককে ঠাণ্ডা রাখে বলে চামড়া ফেটে যাওয়া বা ফুলে ওঠার মতো সমস্যাগুলি হয় না।
৬.টুথপেস্ট:
টুথপেস্ট ত্বকের সমস্যা নিবারণে দারুণ কাজ দেয়। এর কারণ হল এতে থাকে সিলিকা নামক একটি উপাদান, যা স্কিনের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে। ফলে ব্রণর প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। তবে মনে রাখতে হবে, হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি টুথপেস্টেই এই সিলিকা নামক উপাদান থাকে। তাই ব্যবহার করার আগে টুথপেস্টের উপাদান সম্পর্কে ধারণা করে নেওয়া উচিত।
৭.হলুদ:
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে হলুদের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হয়েছে। ত্বকের যে কোনও সমস্যা সমাধানে হলুদের ব্যবহার অনস্বীকার্য। মনে রাখতে হবে যে আমাদের ত্বকের ক্ষতির জন্য দায়ি থাকে বেশ কয়েকরকম আণুবীক্ষণিক জীবাণু। এই সব জীবাণুদের দূর করে ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে হলুদ। এছাড়াও ত্বকের থেকে অতিরিক্ত তেল শোষণ করতে পারে এই প্রকৃতিক উপাদানটি। ফলে ব্রণ সারতে সময় নেয় না। প্রসঙ্গত, হলুদে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
৮. টমাটো:
ত্বক এবং চুলের যত্নে টমাটোর জুড়ি মেলা ভার। কারণ টমাটোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এছাড়াও থাকে খনিজ উপাদান এবং ভিটামিন। এই উপাদানগুলি ত্বককে আদ্র রাখে। ফলে ব্রণর প্রকোপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটে, লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, কোলেস্টেরলের সমস্যা দূর হয় এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয় এই সবজিটি।
বিডি প্রতিদিন/২৯ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল