২১ মে, ২০২৪ ১৪:১০

সুস্বাস্থ্যে ব্যায়াম

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুস্বাস্থ্যে ব্যায়াম

মডেল : রিমি, ছবি : মনজু আলম

সুস্থ থাকতে পুষ্টিকর খাবার, নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের পাশাপাশি প্রয়োজন নিয়মিত ব্যায়াম। আর ব্যায়াম মানেই পাঁচ মাইল হাঁটা কিংবা দীর্ঘক্ষণ জিমে সময় কাটানো নয়। প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০-৪০ মিনিট হাঁটাও ব্যায়ামের অংশ...

শরীরচর্চায় স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকে, তেমনি মনও থাকে প্রফুল্ল। শরীরের অন্দরের নানা সমস্যা দূর হয়। এ জন্য অবশ্য প্রতিদিন পাঁচ মাইল হাঁটা কিংবা দীর্ঘ সময় জিমে সময় কাটানোর প্রয়োজন নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট দ্রুত হাঁটার বা ৭৫ মিনিট দৌড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। তাই প্রতিদিন সম্ভব না হলেও সপ্তাহে পাঁচ-ছয় দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। ব্যায়ামের ফলটা খুব ধীরগতিসম্পন্ন, যে জন্য মানুষ এটার প্রতি আকৃষ্ট কম হয়। কিন্তু সুস্থ-সবল জীবনযাপন করতে ব্যায়ামকে প্রতিদিনের রুটিনে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।

বয়স বেশি হলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া জাতীয় বিভিন্ন অসুখ সৃষ্টি হয়। এগুলো যে আগেও হতে পারে না, তা নয়। এসব অসুখের কারণে দীর্ঘদিন হাঁটতে না পারলে বা ব্যায়াম করতে না পারলে সমস্যা আরও বাড়ে। কিছু ঝামেলাহীন ব্যায়াম এ ক্ষেত্রে আপনাকে সহায়তা করতে পারে। এমনকি এই রমজানেও এটি আপনাকে ফিট রাখতে পারে।

কোন ধরনের ব্যায়াম করবেন
ব্যায়াম বলতে কেউ হয়তো নিয়মিত জোরকদমে একটু হাঁটছেন, আবার কেউ করছেন যোগাসন। কিন্তু তাতে পুরো কাজ কখনো হয় না। ঠিক কী করলে শরীরের প্রয়োজনীয় ওয়ার্কআউট হয়, তা জানতে হবে। নিয়ম করে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন করতে হবে পেশির শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম। তাই ট্রেডমিল বা ছাদে হাঁটুন, স্পট জগিং করুন, স্পট স্কিপিং করুন বা সাইকেল চালান। ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন। সাধ্যমতো জোরে হাঁটলে হার্ট ও ফুসফুসের বেশি উপকার হয়। টানা ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটুন। টানা না পারলে সকাল-বিকাল ভাগ করে নিয়ে ২০ মিনিট করে হাঁটুন। এমন গতিতে হাঁটুন যেন হাঁপিয়ে গেলেও দু-চারটে কথা বলা যায় কিন্তু গান গাওয়া যায় না। ব্যায়ামের আগে হাঁটু-কোমর-গোড়ালির অবস্থা দেখে নেবেন। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কম থাকলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করুন। তবে হাঁটা বা জগিংয়ের আগে ভালো মানের জুতা পরে নেবেন।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা শরীরচর্চা অর্থাৎ ব্যায়াম করেন, তাদের মস্তিষ্কের আকারও অন্যদের চেয়ে বড় হয়। ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের যে অংশ স্মৃতিশক্তি ও শেখার কাজ করে, সেই অংশের কর্মক্ষমতাও বাড়ে
বাড়তি ওজন নিয়ে এবং শরীরের ওজন ব্যবহার করে পেশি জোরদার করার ব্যায়াম করা যায়। এর মধ্যে বিভিন্ন রকম স্কোয়াটিং যেমন আছে তেমনি আছে লেগ রাইজিং, প্ল্যাঙ্ক, পুশ-আপ ইত্যাদি। তবে বয়স্ক, ক্রনিক অসুখ আছে বা শারীরিক ফিটনেস কম, হাঁটু ও কোমরে ব্যথা আছে- এমন মানুষের ক্ষেত্রে অবশ্যই ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ব্যায়াম করা উচিত।

যোগব্যায়াম সব বয়সী মানুষই করতে পারে। শুরু করতে চাইলে প্রশিক্ষকের অধীনে শুরু করাই ভালো। মেডিটেশন শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিকভাবে সুস্থ রাখে। তাই ব্যায়ামের পাশাপাশি নিয়মিত মেডিটেশনও করতে পারেন; যা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটাবে। এক জায়গায় টানা বসে থাকার অভ্যাস থাকলে সেটা বাদ দিন। অন্যথায় ব্যায়ামের উপকারিতা পাওয়া যাবে না।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর