তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দুর্যোগের মধ্যে আশা জাগানিয়া সংবাদ পরিবেশন করে মানুষকে জীবন সংগ্রামে টিকিয়ে রাখার মনোবল যোগতে সংবাদপত্র শিল্প সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্যসচিব কামরুন নাহার, নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ এবং অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে মতিউর রহমান, মাহফুজ আনাম, নঈম নিজাম, তারিক সুজাত, শাহ হোসেন ইমাম, আলতামাশ কবির মিশু ও সাইফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আশাই মানুষকে ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যায় এবং জীবন সংগ্রামে টিকিয়ে রাখে। সেজন্যই আমি সেই সংবাদগুলো প্রকাশের অনুরোধ জানাবো, যেগুলো মানুষের মাঝে আশা জাগাবে। মানুষকে জানাবে যে, আগামীতে সমস্ত অন্ধকার কেটে গিয়ে সুদিন আসবে।
সংবাদপত্র মালিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা চেষ্টা করবেন যাতে করে ইতিবাচক সংবাদগুলো বেশি করে আসে। এসময়ে ইতিবাচক সংবাদ খুব জরুরি। কারণ হতাশাগ্রস্ত ও শঙ্কিত মানুষ ভবিষ্যত নিয়ে ভীষণভাবে চিন্তিত। এই সময়ে মানুষকে আশাবাদী করে তোলা আমাদের দায়িত্ব।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মাধ্যমেও অনেক সময় নেতিবাচক সংবাদ আসে, যেগুলো অনেকসময়ই বাস্তবচিত্রের পরিস্ফুটন নয়। আমি দেখেছি যে গতকাল বিদেশি গণমাধ্যমে এমন একটি সংবাদ এসেছে, যেটি এখানে অনেক পত্রিকায়ই ছাপা হয় নাই। এইজন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংবাদপত্র ও সরকার, আমরা আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবো। কারণ আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেই লক্ষ্যেই আমরা সবাই একযোগে কাজ করবো। নোয়াব সভাপতি একে আজাদ সরকারি ক্রোড়পত্রসহ বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল যাতে সংবাদপত্রগুলো দ্রুত পেতে পারে সেজন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে আরো জোরালো ভূমিকা নেয়ার অনুরোধ করেন। একইসাথে সংবাদপত্রের জন্য ব্যাংক ঋণ সুবিধা ও সংবাদপত্রের হকার, পরিবহন শ্রমিক ও এজেন্টদের জন্য আর্থিক প্রণোদনার বিষয়গুলো সুবিবেচনার দাবি জানান।
জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে সংবাদপত্রের যে বকেয়াগুলো আছে, সেগুলো পরিশোধের জন্য ইতোমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ থেকে চিঠি দিয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে সব মন্ত্রণালয় সংবাদপত্রের বকেয়া পরিশোধ করে। তিনি বলেন, সে প্রেক্ষিতে আমরা আগামী সপ্তাহে প্রয়োজনে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটা তাগিদপত্র সব মন্ত্রণালয়ে দেব।
ড. হাছান আরও বলেন, আপনারা সংবাদপত্র পরিচালনায় যে ঋণের কথা বলেছেন, সে বিষয়েও আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কথা বলবো। কারণ আমার দৃষ্টিতে সংবাদপত্র একটি সার্ভিস সেক্টর। শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে শিল্প হিসেবেও আপনারা কিছু সুবিধা পান, পাশাপাশি সার্ভিস সেক্টর হিসেবেও আমি মনে করি এখানে সুযোগ রয়েছে।
নোয়াব প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) প্রতিনিধিবৃন্দ। ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী মন্ত্রীর সাথে মতবিনিময়কালে সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর খোকনের পরিবারের জন্য সাহায্য কামনা করেন। সেই সাথে করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিকদের সুচিকিৎসা ও ডিআরইউ সদস্যদের জন্য সম্ভাব্য সরকারি সহায়তার আবেদন জানান প্রতিনিধিবৃন্দ।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক