১ জুলাই, ২০২০ ১৭:১৯

চালের বাজার অস্থিতিশীল করলে কঠোর ব্যবস্থা, প্রয়োজনে আমদানি করবে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

চালের বাজার অস্থিতিশীল করলে কঠোর ব্যবস্থা, প্রয়োজনে আমদানি করবে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এই ভরা মৌসুমে চালের বাজার অস্থিতিশীল হবার কোন কারণ নেই। যদি কেউ অপচেষ্টার মাধ্যমে চালের মূল্য বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার। প্রয়োজনে সরকারিভাবে চাল আমদানি করা হবে। 

মন্ত্রী আজ ‘বাজারে চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা’ শীর্ষক এক সভায় মিন্টো রোডস্থ সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। 

সভা সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। সভায় অংশ নেন দেশের ৮টি বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারগণ, ৮ বিভাগের বিভাগীয় চালকল মালিক সমিতির দুজন করে প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণ, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।

খাদ্যমন্ত্রী চালকল মালিকদের উদ্দেশে বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখেন, সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেন। যদি তা না করেন তবে সরকার চাল আমদানিতে যেতে বাধ্য হবে। কিন্তু সরকার আমদানিতে যেতে চায়না, গেলে মিলারদের লস হবে এবং যে সমস্ত কৃষক ধান ধরে রেখেছে তারাও লোকসান করবে। এই সময়ে যে সমস্ত মিল এগিয়ে আসবে তাদেরকে এ, বি এবং সি এভাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করার জন্য ইতিমধ্যেই খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  সেসব মিলকে পরবর্তীতে সেভাবে মূল্যায়ন করা হবে। 

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এই করোনা কালীন সময়ে সবাই বিপদগ্রস্ত। এবার না হয় লাভ একটু কম করলেন। প্রত্যেক বার লাভ সমান হয় না। এবার মানুষকে  সেবা করার সুযোগ রয়েছে। সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন। ২০১৭ সালের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে মিল মালিকদের একটা আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৭ সালে হাওড়ে বন্যার সময় সরকারিভাবে চালের সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হলে সরকার চাল আমদানির উপর ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিল ফলে ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন চাল বিভিন্নভাবে আমদানি করা হয়। সে কারণে সেই বছর মিলমালিকরা এবং কৃষক উভয়েই চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। 

তিনি বলেন, কৃষক বাঁচলে ধান উৎপাদিত হবে এবং আপনারা চালকল মালিকগণ বেঁচে থাকবেন। কৃষক যাতে বিপাকে না পড়ে; বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষক যেন ধানের ন্যায্য মূল্য পায় সেজন্য এবার ৮ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ইতিমধ্যেই কৃষক তার ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে।

মন্ত্রী মিলগেট থেকে কোন ধান কত দামে বিক্রি হচ্ছে তা যাচাই করা এবং মনিটরিং করার জন্য উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আপনারা সাপ্তাহিক, পাক্ষিক একটা সিলিং করে  নেন। কখন, কি পরিমাণ চাল সরকারি খাদ্য গুদামে সরবরাহ করবেন। সরকার সকল ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছে, অতএব সেই প্রণোদনার অংশীদারিত্বের সুযোগ আপনারাও নিতে পারবেন বলে উপস্থিত মিল মালিকদের অবহিত করেন খাদ্যমন্ত্রী। সরকারিভাবে চালের মূল্য বৃদ্ধি করা কোনোভাবেই হবে না জানান তিনি। 

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, যেহেতু খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে আপনাদের ব্যবসা সবসময় করতে হবে, অতএব লাভ বেশি হলে চাল সরবরাহ করবেন; লাভ কম হলে চাল সরবরাহ করবেন না; এটা হতে পারেনা। 

মন্ত্রী খাদ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তাদের সতর্ক করে বলেন, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ধান চাল সংগ্রহের সময় কোন কৃষক বা মিলারের সঙ্গে অসদাচারণ করবেন না; দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হবেন না।

সভায় উপস্থিত বরিশাল বিভাগ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, গত বোরো মৌসুমের শেষদিকে কৃষক ধান বিক্রি করে মণপ্রতি ভালো লাভ করেছিল; এবারও বেশিরভাগ কৃষক যে যতটুকু পারে সেই পরিমাণ ধান নিজেদের কাছে ধরে রেখেছে। তাদের আশা এবারও শেষ দিকে বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারবে।

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর