শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, যে দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই দেশটাকেই আমরা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এ দেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। যেখানে থাকবে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ। আর এর কেন্দ্রেই রয়েছে স্মার্ট নাগরিক। সেই স্মার্ট নাগরিকই হবে এদেশের শিক্ষার্থীরা। স্মার্ট শিক্ষার মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা এদেশের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। একটা শিক্ষাক্রম চালু করতে হলে অনেক কিছু করতে হয়। সেখানে অনেক ঘাটতি থাকতে পারে, সমস্যাও থাকতে পারে। কিন্তু এই শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে, এটি চলবে। কেউ কেউ মনে করছেন তাদের কোচিং ব্যবসা আর চলবে না, কেউ কেউ মনে করছেন তাদের নোট-গাইডের ব্যবসাও আর চলবে না। সে কারণে অনেকেই এর বিরোধীতা করছেন। আমরা কিন্তু সেগুলোর সবই লক্ষ রাখছি। কাজেই এই নতুন শিক্ষাক্রম থাকবে এবং এই শিক্ষাক্রমেই আমাদের শিক্ষার্থীরা জেনে-বুঝে দক্ষ ও যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর যেভাবে জোর দিচ্ছি একইভাবে মানবিক-সৃজনশীল মানুষ গড়ার দিকেও জোর দিচ্ছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন চিন্তা করতে শিখে, যেন সমস্যার সমাধান করতে শিখে। শিক্ষার্থীদের ভাবতে শেখার প্রক্রিয়াটাকেই একটা প্রতিক্রিয়াশীল পক্ষ ভয় পাচ্ছে। তারা ভাবছে- দেশের মানুষ যদি ভাবতে শিখে তাহলে তো তাদের মগজ ধোলাই করা যাবে না। কাজেই তাদের অনেক ভয়। এই কারণেই অনেকে নতুন শিক্ষাক্রমের বিরোধীতা করছেন। কিন্তু নতুন এই শিক্ষাক্রম এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ তার জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত ইসলামবিরোধী বা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো কিছু কোনদিন করেনি, কোনো দিন করবেও না। কাজেই নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে যেগুলো বলা হচ্ছে- সেগুলো মিথ্যাচার-অপপ্রচার। আর এগুলো যারা করছে তারাই চূড়ান্ত রকমের ইসলামবিরোধী কাজ করছে। কারণ ইসলাম কখনো মিথ্যাচার, অপপ্রচার, গুজব রটানোকে সমর্থন করে না। ইসলামের দোহাই দিয়ে যারা এই কাজগুলো করছে তাদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে।
একই অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আজ এই প্রতিষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন করলেন শিক্ষাবন্ধব শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আর এই ম্যুরাল নির্মাণের পেছনে যার শ্রম রয়েছে তিনি প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষাবান্ধব মন্ত্রী দেয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমি নিজেও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের জন্য কাজ করছি। ভেবে দেখলাম পৃথিবী থেকে যেহেতু যেতেই হবে, তাহলে বঙ্গবন্ধুর কিছু ম্যুরাল স্থাপন করে যাই। কারণ তিনিই এই জাতির পিতা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সাহা।
সভাপতির বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে কেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল থাকবে না। যেখানে পড়াশোনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই ভাবনা থেকেই তিনি নিজেই উদ্যোগ নিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে ম্যুরাল স্থাপন করেন। এরপরপরই বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন