পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও ৩ নভেম্বরের খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল জিয়া ও খালেদা জিয়া। খুনি জিয়ার ইন্দনে এ দুটি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। সেই খুনির দলেরা আবার চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে। তারা অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।’
শুক্রবার বিকাল শরীয়তপুরে দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জেল হত্যা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এনামুল হক শামীম বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী তাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল বঙ্গবন্ধুর সঙ্গের কারোরই চিহ্ন রাখা যাবে না। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানি গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট হত্যা করেছিল এবং আওয়ামী লীগ যাতে নেতৃত্বশূন্য হয়ে যায় সে কারণে জাতীয় চার নেতার হত্যাযজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী সময়ে জাতীয় চার নেতাসহ অনেককেই নানাভাবে প্রলোভন দেখানো হয়েছিল খুনি মোশতাকের স্বৈরশাসিত সরকারের কেবিনেটে যোগদানের জন্য। কিন্তু তারা ঘৃণাভাবে সেটা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তখন থেকেই তারা জিয়া ও মোশতাকের কুনজরে পড়েন। তাদের দোসর বিএনপি জামায়াত ফের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মরিয়া। তবে এদেশের জনগণ তাদের আর কোনোদিন ক্ষমতায় আনবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির জন্মই হয়েছে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। তাই তারা এসব ছাড়তে পারে না। জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়া, খালেদা জিয়া থেকে তারেক রহমান একই ধারায় চলছে। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট একইসুতোয় গাঁথা। ওরা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও আওয়ামী লীগকে ভয় পায়, ওরা জনগণের রায়কে ভয় পায়। তাই পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সবসময় মরিয়া থাকে।’
উপমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আগ্রাসী মনোভাবের রাজনীতি এদেশের মানুষ আর চায় না। এই অপরাজনীতির রাজনীতির কারণে এদেশের মানুষ বারবার বিএনপিকে প্রত্যাখান করেছে। কারণ, এদেশের মানুষ বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের কথা ভুলে নাই। গণধিকৃত বিএনপি আবারও দেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টায় মত্ত। তবে সেটা আর সম্ভব না। কারণ, জনগণ বিশ্বাস করে,"বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর বীর কন্যা শেখ হাসিনার কাছেই নিরাপদ।" অন্য কারো হাতে নয়।’
এনামুল হক শামীম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। তেমনি আজ আমরা দেশের উন্নয়নের দিকে তাকিয়ে বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্ম না হলে উন্নয়নশীল দেশের গর্বিত নাগরিক হতে পারতাম না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত হবে উন্নত, সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ। দেশে সংবিধান মেনেই নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতে শক্তিমান, জনগণের বলে বলিয়ান। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে জয়ী করতে হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে।
এসময় নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম ইসমাইল হক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদারসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা ও মিলাদে অংশগ্রহণ করেন উপমন্ত্রী।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ