ভারতের বিহার রাজ্যে গত ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা। কিন্তু পরীক্ষার নামে যা চলছে তা ভাষায় বর্ণনা করা অনেকটাই কঠিন। পরীক্ষা মানেই হলো প্রস্তুতির উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত কিছু বিষয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বা জানার পর্যায় যাচাই করা। কিন্তু বিহারে যা চলছে তা কি আদৌ এর মধ্যে পড়ে! কারণ রাজ্যের কিছু কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেওয়ার নামে আসলে নকলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। শুধু পরীক্ষার্থী নয়, কেন্দ্রের বাইরে নকল সরবরাহ করতে গিয়ে তাদের অভিভাবক বা বন্ধুাবান্ধবরা যা করছেন তাতে যে কেউ বিস্মিত না হয়ে পারবেই না।
নকল সরবরাহের করতে গিয়ে অভিভাবকদেরকে পরীক্ষা কেন্দ্রের দেওয়াল টপকানো তো সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক অভিভাবককেতো বস্তাভর্তি বা ব্যাগভর্তি নকল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে ঘুরতে দেখা গেছে। শুধু ঘোরা বললে ভুল হবে, তারা সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে নকল সরবরাহও করেছেন। আর সেই নকল খাতার নিচে রেখে নির্ভয়ে লেখায় ব্যস্ত কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীরা। নকল করার ধরনও চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়ার মতো। এমন দৃশ্য দেখে যে কারো মনে হবে পরীক্ষা কেন্দ্রে হয়তো নজরদারি বা তদারকির দায়িত্বে যেন কেউ নেয়।
আসলে বিহারে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে নকল কোনো বিরল বিষয় নয়। তা অনেকটাই মামুলি ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। যেকোনো বোর্ড পরীক্ষার কেন্দ্রে নকল সরবারহ সেখানে একপ্রকার নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্তব্যরত পর্যবেক্ষক এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করলেও নকল সরবরাহকারীদের সংখ্যা এবং দাপটের কাছে তারা অনেকটাই অসহায়। অভিযোগ রয়েছে, অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিনিময়ে নকল সরবরাহে সহযোগিতা করেছে পুলিশদের একাংশ।
মঙ্গলবার ও বুধবার যথাক্রমে অঙ্ক ও ইংরেজি পরীক্ষায় নকল করার সময় মোট ১ হাজার শিক্ষার্থী হাতেনাতে ধরা পড়েছে। প্রাথমিকভাবে নকল ঠেকাতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে প্রশাসনকে।
উল্লেখ্য, এ বছর বিহার রাজ্যের দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৪ লাখের বেশি পরীক্ষার্থী। ৮০ হাজার কেন্দ্রে চলছে এই পরীক্ষা। সূত্র: বিবিসি
বিডি-প্রতিদিন/ ২০ মার্চ ২০১৫/শরীফ