দিল্লির রাস্তায় পায়রাদের খাওয়ানো নিষিদ্ধ হতে পারে, এমনটাই ভাবছে দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (এমসিডি)। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কারণে বহু মানুষ পায়রাকে খাওয়ালেও এর স্বাস্থ্যগত ক্ষতিকর দিকগুলো ক্রমশ বাড়ছে। রাস্তার মোড়, ফুটপাত এবং পার্কের আশপাশে পায়রা খাওয়ানোর জায়গাগুলোতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
পায়রার অত্যধিক বর্জ্য জমে গিয়ে সালমোনেলা, ই. কোলাই, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাইপারসেনসিটিভিটি নিউমোনাইটিসের মতো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি করে। ফলে শ্বাসযন্ত্রের রোগ, হাঁপানি এবং ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে, যা বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য বিশেষ ক্ষতিকর।
পায়রার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ
নগর এলাকায় খাদ্য সহজলভ্য হওয়ায় এবং বিভিন্ন ভবনের উঁচু, সংকীর্ণ জায়গাগুলো পায়রার বাসা বাঁধার জন্য উপযোগী হওয়ায় পায়রার সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া পায়রা সারা বছরই বংশবৃদ্ধি করে, যা গত ২৫ বছরে এদের সংখ্যা ১০০% এরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। শহরে পর্যাপ্ত খাবার ও বাসস্থানের অভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিবর্তে এরা শহুরে জীবনে সহজেই মানিয়ে নিয়েছে।
পায়রা খাওয়ানোর স্বাস্থ্যঝুঁকি
পায়রা খাওয়ানোর ফলে আশেপাশের এলাকার মানুষ, বিশেষত কম প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি, হাঁপানি বা ফুসফুসের সংক্রমণের শিকার হন। এমসিডির বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পায়রার বর্জ্য ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটিয়ে এলার্জি, শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়াও এই আবর্জনা থেকে ক্রিপ্টো-কক্কাল মেনিনজাইটিস, সাইটাকোসিস ও ত্বকের রোগ হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
অ্যাপোলো হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পালমোনোলজিস্ট ড. নিখিল মোদি জানান, পায়রার সংস্পর্শে এলে হাঁপানি ও এলার্জির ঝুঁকি বাড়ে এবং দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ক্ষেত্রে ফুসফুসের দাগ পড়ে যা শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা সৃষ্টি করে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরামর্শ
পায়রার আবর্জনা পরিষ্কার করার সময় মাস্ক এবং গ্লাভস পরার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাড়ির আশপাশের অঞ্চল থেকে পায়রাকে দূরে রাখতে জাল লাগানো উত্তম। এমসিডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা পায়রার জমায়েত রোধ এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে পরামর্শ জারি করতে যাচ্ছেন। দিল্লির উচ্চ দূষণের মধ্যে এই ধরণের এলার্জি সমস্যা আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল