চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানার বাহির সিগন্যাল এলাকায় রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার শিকার বাসটির চালকের কানে ছিল হেডফোন। যাত্রীরা রেলের হুইসেল শুনলেও চালক শুনতে পায়নি। ফলে সে ট্রেনের আসা খেয়াল না করে বাসটিকে রেলক্রসিংয়ের উপরে তুলে দেয়। এছাড়া অবৈধ রেলক্রসিং হওয়ায় সেখানে ছিল না কোন গেটম্যান।
দুর্ঘটনাকবলিত বাসের বেঁচে যাওয়া কয়েকজন পোশাকশ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সকালে এ রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে চার শ্রমিক নিহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার সময় ক্রসিংয়ে গেটম্যান বা প্রতিবন্ধকতা না থাকায় বেইস টেক্সটাইলের শ্রমিকবাহী বাসটি দ্রুত রেললাইনের ওপর উঠে যায়। এ সময় দোহাজারীর দিক থেকে চট্টগ্রাম শহর অভিমুখী একটি লোকাল ট্রেন মুহূর্তের মধ্যেই বাসটির মাঝামাঝি স্থানে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
ঘটনাস্থলে থাকা রেলওয়ের এক কর্মচারী বলেন, এই ক্রসিংয়ে গেটম্যান বা প্রতিবন্ধকতা থাকার কোনো কারণও নেই। এখানকার কতিপয় শিল্পমালিক ও যানবাহন চালক অবৈধভাবে এই ক্রসিং তৈরি করে এই পথে যানবাহন চলাচল করার অবৈধ পথ তৈরি করেছেন। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০০-৩০০ গজ দূরে কাপ্তাই রাস্তার মাথায় একটি বৈধ রেলক্রসিং এবং গেটম্যান রয়েছে। তাই এই নিকট দূরত্বে নতুন কোনো ক্রসিং বৈধ নয়। ফলে যানবাহন চালকরা নিজেদের ঝুঁকি নিয়ে এই ক্রসিং পার হন।
বেঁচে যাওয়া বাসযাত্রী বেইস টেক্সটাইলের শ্রমিক সুমি বেগম এবং হাসিনা আক্তার জানান, তাদের বাসটিতে চালক সারাক্ষণ কানে হেডফোন লাগিয়ে রেখেছিলেন। সকালে রাস্তা ফাঁকা থাকায় চালক দ্রুত গাড়ি চালিয়ে কোনো দিকে না দেখেই রেললাইনের ওপর উঠে যান।
অপর যাত্রী ফারজানা জানান, রেললাইনের কাছাকাছি আসার পর তারা সবাই রেলের হুইসেল শুনতে পান। কিন্তু তাদের বাসচালকের কানে হেডফোন থাকায় কিছু না শুনেই বসটিকে রেলক্রসিংয়ে উঠিয়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যেই ট্রেনটি বাসটিকে ধাক্কা মারে।
এদিকে এ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে তিন নারী শ্রমিকের নাম জানা গেছে। তারা হলেন জেসমিন আক্তার (২৫), লাকি আক্তার (২৪) ও লাকি (২২)। তারা তিনজনই বেইস টেক্সটাইলের শ্রমিক।