খালেদা জিয়ার জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো খুলে দেওয়ার ব্যাপারে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. গোলাম হোসেন। রাজধানীর ইস্কাটনের বিসিএস কর একাডেমিতে বুধবার সকালে ই-টিআইএন সেবা সেন্টার উদ্বোধন শেষে এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বলেন, ‘এ ব্যাপারে কাজ চলছে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানানো হবে’।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যমতে, বেগম খালেদা জিয়ার জব্দকৃত ৮টি ব্যাংক হিসাব খুলতে নানা টানাপড়েন চলছে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মধ্যে। কোনো কর মামলা না থাকা সত্ত্বেও বিগত ৭ বছর যাবৎ ওই ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দ রয়েছে। ২০০৭ সালের শেষের দিকে এ ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দ করেছিল এনবিআর। তখনকার ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দ করতে নেপথ্যে ভূমিকা রাখে। পরে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাংক হিসাব খোলা হলেও, জব্দ রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার হিসাব। টাকা তুলতে না পারায় সম্প্রতি বাড়ি ভাড়া মেটাতে সমস্যায় পড়েন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বিষয়টি গত মাসে গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে প্রতি মাসে খরচ বাবদ একটা নির্দিষ্ট অংকের টাকা তোলার অনুমতি দেওয়া হয় তাকে।
তথ্যমতে, এনবিআরের গোয়েন্দা শাখা 'সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স সেল'র (সিআইসি) তৎকালীন মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের কাছে ২০১১ সালের ৩০ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাংক হিসাবগুলো খুলে দিতে আবেদন করেন অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান। মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বর্তমানে এনবিআরের সদস্য। ওই আবেদনে বলা হয়, 'সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বর্তমানে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সমুদয় ব্যাংক হিসাব জব্দ করা আছে, যাহা ইতোপূর্বে একাধিক আবেদন করা সত্ত্বেও অবমুক্ত করা হয় নাই। বেগম খালেদা জিয়ার নামে যেহেতু এনবিআরের কোনো মামলা নেই, তাই ব্যাংক হিসাবগুলো অবমুক্ত করতে আইনগত বাধা নেই'।
আবেদনে আরও বলা হয়, 'বেগম খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের কারণে তার বসবাসের জন্য ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের ১ নম্বর বাড়িটি প্রতি মাসে দুই লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি ভাড়া ও সাংসারিক খরচসহ মোট দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়মিত ভিত্তিতে ব্যাংক থেকে উত্তোলন প্রয়োজন। আবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টেনমেন্ট শাখায় বেগম খালেদা জিয়ার হিসাব নম্বর (...) হতে টাকা উত্তোলনের অনুমতি হোক'। এ আবেদনের পর দুই বছর অতিবাহিত হলেও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার ব্যাংক হিসাবগুলো খুলে দেয়নি এনবিআর।