বাগেরহাটের সুন্দরবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালে বনদস্যুদের হামলায় র্যাব ও কোস্টগার্ডের তিন সদস্য হত্যার চাঞল্যকর মামলায় আদালত ছয় বনদস্যুদের ফাঁসি ও সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বাগেরহাটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম সোলায়মান আজ মঙ্গলবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষনা করেন। এসময় আদালত অভিযোগ প্রমানীত না হওয়ায় ওই মামলার দায় থেকে দুই জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত ১৩ আসামির সবাই পলাতক রয়েছে। তবে রায় ঘোষণার সময় খালাস প্রাপ্ত ওই দুই আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলো।
ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন, রফিকুল সেখ, কুদ্দুছ সেখ, ইদ্রিস সেখ, বাবুল সেখ, আলকাচ ফকির ও ইলিয়াস সেখ। এদের সবার বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার খালকুলিয়া গ্রামে।
যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন, রিয়াজুল সেখ, আকরাম সেখ, আলম সেখ, বাদশা সেখ, জামাল সেখ, কামাল সেখ ও আসলাম সেখ। এদের সবার বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবগাছিয়া ও খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামে। ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত ১৩ আসামিই সুন্দরবনের কুখ্যাত বনদস্যু।
বেকসুর খালাস প্রাপ্ত দুইজন হচ্ছেন, ন্নানা সেখ ও মিজানুর রহমান।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবারণে জানা গেছে, র্যাব-৬ এর তৎকালিন অধিনায়ক মেহেদী হাসান ও মংলা কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা লে: কমান্ডার সিদ্দিকের নেতৃত্বে যৌথবাহিনী ২০০৬ সালের ১ ডিসেম্বর সুন্দরবনে বনদস্যুদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। অভিযান চলাকালে ওইদিন রাত দেড়টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলাধীন পশুর নদী দিয়ে একটি খালে পৌঁছালে বনদস্যুরা যৌথ বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে বনদস্যুরা যৌথ বাহিনীর কয়েক সদস্যদের জড়িয়ে ধড়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। এ ঘটনায় নিখোঁজ হয় র্যাব খুলনা-৬ এর পিসি মো: কাঞ্চন, কোস্টগার্ড মংলা পশ্চিম জোনের সদস্য এ এইচ কবির ও এম এ ইসলাম। ২ ডিসেম্বর পশুর নদী থেকে নিঁখোজ কোস্টগার্ড সদস্য এম এ ইসলামের লাশ ও পরে কোস্টগাডের্র অপর সদস্য এ এইচ কবির, র্যাবের পিসি মো: কাঞ্চনের লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনার পর ২ ডিসেম্বর র্যাব খুলনা-৬ এর ডিএডি মো: মহাসীন আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু বনদস্যুকে আসামি করে মংলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মংলা থানার তৎকালিন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নাসির উদ্দিন ২০০৭ সালের ৮ মে মামলার তদন্ত শেষে ১৫ জন বনদস্যুকে অভিযুক্তহ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত এই মামলার ১১জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন ও তথ্য প্রমানাদির ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে এরায় প্রদান করেন।