সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক গুলি চালানো নিয়ে নিজেদের পক্ষে সাফাই গাইলেন বিএসএফ ডিজি দেবেন্দ্র কুমার পাঠক। তিনি বলেন, 'যখন আমাদের তরফে সীমান্তে গুলি চালানো হয় তখন দেখতে হবে কি পরিপ্রেক্ষিতে, কোন পরিস্থিতিতে গুলি চলেছিল? যদি কোন দেশের নাগরিক অবৈধভাবে অন্য দেশের মাটিতে ঢুকে পড়ে কিংবা সীমান্তে নাশকতা সংগঠিত করে সেক্ষেত্রে সীমান্ত নাশকতা ঠেকাতে সেই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে গুলি চালানোটা বাধ্যতামূলক। একমাত্র চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলেই বিএসএফ গুলি চালাতে বাধ্য হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা যখন নিজেদেরকে প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয় একমাত্র তখনই চরম পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে তারা গুলি চালায়। সেক্ষেত্রে কিছু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে থাকে'।
চারদিন ব্যাপী বিজিবি-বিএসএফ ডিজি পর্যায়ের বৈঠক শেষে রবিবার দিল্লিতে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ডি কে পাঠক বলেন, 'গত চার দিন ধরে আমাদের দুই বাহিনীর মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে বৈঠক হয়েছে এবং সেটা আমরা গুরুত্ব দিয়ে চিন্তাভাবনা করেছি। সীমান্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন বিতর্কিত এবং জটিল বিষয়গুলিও অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দুই বাহিনীর পারস্পরিক সম্পর্ক যত মজবুত হবে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত রক্ষা তত সহজ হবে।'
অন্যদিকে বাংলাদেশে জাল নোট তৈরির বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যে অভিযোগ উঠে এসেছে সে প্রসঙ্গে বিজিবি ডিজি জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, 'বাংলাদেশে জাল নোট তৈরির কোন সন্ধান আমরা এখনও পায়নি। আমাদের কাছে এমন কোন তথ্যও নেই, এমন কিছু খুঁজেও পাওয়া যায়নি। তবে এটা ঠিক যে, দেশের বাইরে থেকে বেশ পরিমাণে জাল নোট এদেশে আসে। তবে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার সেইসব জাল নোট বাজেয়াপ্ত করার ব্যাপারে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে।' এছাড়া ‘জাল নোট চিহ্নিতকরণ এবং তাকে বাজেয়াপ্ত করতে দেশের প্রতিটি চেকপোস্ট, বিমানবন্দর, নৌবন্দরসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘ডিটেকশন মেশিন’ স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।
উল্লেখ্য গত ২১ তারিখ দিল্লির সাউথ ব্লকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিজি পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ, উন্মুক্ত সীমান্ত, জাল রুপি পাচার, চোরাকারবারি সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি সীমান্তে বিএসএফ-এর হাতে বাংলাদেশী মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা এবং বাংলাদেশের মাটিতে উত্তর-পূর্ব ভারতের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর গোপন ঘাঁটি নির্মূল করার বিষয়টি আলোচনার টেবিলে উঠে আসে। বৈঠকে ২২ সদস্যের ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিএসএফ'র ডিজি দেবেন্দ্র কুমার পাঠক। অন্যদিকে ২০ সদস্যের বিজিবি'র প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজিবি'র ডিজি মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ। বৈঠক শেষে শিক্ষামূলক ভ্রমণের উদ্যেশ্যে জয়সালমীর এবং যোধপুরে ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্ত পরিদর্শনেও যায় দুই বাহিনীর সদস্যরা।