সব নির্যাতনের বিচার হবে মন্তব্য করে দেশের সব কারাগারগুলোকে সংস্কার করে রাখতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত দীর্ঘ এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'গুম, গুপ্তহত্যা এবং গ্যাস চেম্বারের অব্যবহিত পরেই আসে কুখ্যাত নাৎসি সহযোগীদের বিচারের জন্য নুরেমবার্গ ট্রায়াল। নুরেমবার্গ ট্রায়ালের ন্যায় বাংলাদেশের মাটিতেও যে দেশের নাৎসি সহযোগীদের বিচার হবে না—এটা যেন কেউ মনে না করে। সুতরাং এখন থেকেই কারাগারগুলো সংস্কার করে রাখলে ভালো হয়।'
সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতার একাধিক মামলা এবং তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের আলোচনার পর বিএনপির পক্ষ থেকে এই ধরনের বক্তব্য এল।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, ‘বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও তাকে গ্রেফতারের ষড়যন্ত্র বন্ধ না হলে, চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আক্রমণ বন্ধ না হলে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে প্রসারিত না করলে বিরোধী দল লড়াই ব্যতিরেকে নতিস্বীকার করবে না।’
'বেগম জিয়ার জন্য নাকি কাশিমপুর কারাগারে জায়গা করে রাখা হয়েছে'- তথ্যমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বেগম জিয়াকে গ্রেফতার ও বিচারের অহর্নিশ হুমকি দিয়ে হাসানুল হক ইনুরা দেশকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন চরম সংঘাতের দিকে। বিদ্যমান সংকটকে তারা আরো বেশি ঘনীভূত করতে চাচ্ছেন।’
সরকার বর্তমানে দেশকে জাহান্নামের দ্বারপ্রান্তে টেনে নিয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘একটি সুসংঘবদ্ধ রাষ্ট্রের বন্ধনগুলোকে ছিঁড়ে ফেলে বাংলাদেশকে একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য যা যা করা দরকার, তার সবকিছুই করে ফেলা হয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “২০০৯ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ে জৈষ্ঠতা ও দক্ষতাকে ডিঙ্গিয়ে আওয়ামী লীগপন্থী পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের স্ব স্ব বিভাগের প্রধান পদে অথবা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করা হয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত রাষ্ট্রানুকূল্য পেয়ে তারাই এখন বেপরোয়া বেআইনি এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ করছেন। দেশের বিরোধী দলের আন্দোলন দমাতে এরা সর্বনাশা নির্মূল যুদ্ধে নেমে পড়েছে। দেশব্যাপী ক্রসফায়ার আর বন্দুকযুদ্ধের মনগড়া কাহিনী তৈরি করে আন্দোলনরত তরুণ নেতা-কর্মীদের মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এরাই হত্যা করেছে।”
সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্যায়ের বাকশালের চূড়ান্ত রূপ দিতে এই অবৈধ নাছোড়বান্দা সরকার রেডিও, টেলিভিশন ও সংবাদপত্র দখল করে নিয়েছে। অবিরাম কুৎসার ধারাবর্ষণ ছাড়া গণমাধ্যমে এখন ন্যায়সংগত প্রতিবাদ বা আন্দোলনের খবর প্রকাশিত হয় না।’
বিডি-প্রতিদিন/২৮ জানুয়ারি, ২০১৫/মাহবুব