বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, 'আমার এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর আকষ্মিক অকাল মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই মা হিসাবে আমি গভীরভাবে শোকাহত এবং মানসিক ভাবে বিপর্যন্ত।'
মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বীরমুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনীর প্রধান এবং রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের পুত্র হিসাবে আমাদের এই সন্তানটি একটি রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা সত্বেত্ত কখনো রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়নি। কেবল মাত্র সে ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে নিজেকে মুক্ত রেখেছিল। দুর্ভাগ্যের বিষয়, শুধুমাত্র শহীদ জিয়া পরিবারের একজন সদস্য হবার কারণেই তাকে নানমুখী জুলুম-নির্যাতন, হেনস্তা-অপপ্রচারের শিকার হতে হয়েছে।
আজ বুধবার রাতে তার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়া, 'অসুস্থ হয়ে প্রবাসে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থাতেও সে চরম প্রতিহিংসামূলক বৈরিতা থেকে নিষ্কৃতি পায়নি। ভাগ্যের এমনই নিষ্ঠুর পরিহাস যে, মা হিসাবে আমি প্রায় আট বছর ধরে এই অসুস্থ সন্তানটির মুখ দেখার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত ছিলাম। অবশেষে আমাকে সন্তানের লাশ গ্রহণ করতে হলো। সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের কাছে আমি এর বিচারের ভার অর্পণ করলাম।'
'জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর জানাজার নামাজে দলমত, শ্রেণীপেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের লাখ লাখ মানুষ শরীক হয়ে যে অবস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তাতে আমি গভীরভাবে অভিভূত। ধন্যবাদ প্রিয় দেশবাসীকে। জিয়া পরিবারের প্রতি গণমানুষের এই অপরিমেয় ভালবাসার বহি:প্রকাশ আমাকে আরো একবার নতুন করে কৃতজ্ঞতার ঋণে আবদ্ধ করলো। বিপুল সংখ্যক মানুষের এই উপস্থিতিতে আমি গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম। শোক কাটিয়ে ওঠার শক্তি সঞ্চয়ে সর্বস্তরের দেশবাসীর এই অংশগ্রহণ আমাকে অনেক সাহায্য করবে।'
তিনি বলেন, 'বিভিন্ন ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের নেতৃবৃন্দের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার এই দুঃখের সময়ে তারা শোকবার্তা পাঠিয়ে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন। আমি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাঁরা শোকবার্তা পাঠিয়ে এবং সশরীরে আমার কার্যালয়ে এসে সহানুভূতি জানিয়েছেন।'
'বিএনপি ও ২০ দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-জোটের নেতা-কর্মী, পেশাজীবী, নাগরিক সমাজের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক, সাংস্কৃকিত অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্ববর্গসহ নরনারী, শ্রেণী-পেশা ও বয়স নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তারা আমার কার্যালয়ে এসে শোক প্রকাশ ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন।'
'তাঁরা এ সময়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে না পারায় আমি গভীরভাবে দুঃখিত। আমি আশা করি পরিস্থিতির বিবেচনায় সকলেই বিষয়টিকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।'
'আমি কোকোর জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই। দেশবাসীকে বলবো, আমি আপনাদের মাঝে আছি এবং যতদিন বেঁচে আছি আপনাদের সঙ্গেই থাকবো ইনশাআল্লাহ।'