রাজধানীর লালবাগ থানার একটি সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় তথ্য গোপন করে পাকিস্তানি নাগরিকসহ ভয়ঙ্কর পাঁচ জঙ্গি জামিন পেয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানি নাগরিক তার পাসপোর্টও জিম্মায় নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে। এই আসামিদের বিরুদ্ধে ভারতের বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথাও মামলার অভিযোগে বলা রয়েছে।
এরকম বিরল জামিনের খবরে ঢাকার আদালত এলাকায় নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারের পরও এ সকল আসামিদের আটক রাখা যাচ্ছে না। এ কারনে মামলার আসামিদের জামিনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জোরালো বিরোধীতা করা হয়।
মামলার নথি সুত্রে জানা গেছে, রাজধানীর লালবাগ থানার একটি সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গত বছরের দুই ডিসেম্বর এই আসামিদের গ্রেফতার করে। পরে চলতি মাসের ১১ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচ আসামিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ জামিন দেন। যাহার ফৌজদারি মামলা (সি আর মিস/জামিন আবেদন) নম্বর-৩৩৮/২০১৫। জামিন আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি পক্ষ জামিনের সমর্থনে শুনানিতে উল্লেখ করেন তারা পরিস্থিতির শিকার। এজাহারে এই আসামিদের নাম নাই। তাহাদেরকে সন্দিগ্ধ আসামি হিসাবে অত্র মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
কিন্তু মামলার নথি সূত্রে দেখা দেখা গেছে, এই পাঁচ আসামির নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া আসমিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে এজাহারে বলা আছে, 'তাহারা জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। আসমিরা দেশি ও আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সহযোগী লোকজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা পূর্বক বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ঢাকাসহ সারাদেশে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাইয়া আসিতেছে। এছাড়া উদ্ধারকৃত আলামত ডেটোনেটর ও বিস্ফোরক দিয়া বোমা তৈরি করিয়া জঙ্গি সংঘটনের কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিল।'
জামিনপ্রাপ্ত আসমিরা হলেন, আবদুল মজিদ, মোহাম্মাদ আলম ওরফে ইয়াসিন, মো. কবির ওরফে আমিন, শেখ মোহাম্মাদ সালামত উল্ল্যাহ ও মো. সফিউল্ল্যাহ। এর মধ্যে মোহাম্মাদ আলম ওরফে ইয়াসিন পাকিস্তানের করাচী জেলার আরঙ্গী থানার ১২ নম্বর আরঙ্গী টাউন এলাকার মোহাম্মাদ ইয়াসিনের ছেলে। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই মো. আব্দুল কাদের মিয়া রিমান্ড প্রতিবেদনে বলেছেন, আসামিদের অনেকের বর্তমানে বাংলাদেশে স্থায়ী ঠিকানা নাই, তাহারা দেশের বাইরে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আসমিরা আরএসও, জিআরসি, এআরইউ ও ইসলামি জঙ্গী সাংগঠনের সত্রিয় সদস্য। এছাড়া আসমিরা জিজ্ঞাসাবাদে এলোমেলো ভাবে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রদান করে। এর আগে গোয়েন্দা পুলিশের এস আই এস এম রাইসুল ইসলাম বাদী হয়ে গত বছরের ৩০ নভেম্বর লালবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন। মামলা নম্বর-০১(১২)১৪। মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসমিরা পরস্পর যোগসাজসে জননিরাপত্তা বিঘ্ন ও জনসাধারনের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করার জন্য উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি সংক্রান্ত বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়েল করা হলো।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/ এস আহমেদ