কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে চাঞ্চল্যকর ফেলানী হত্যা মামলায় ন্যায় বিচার না পেয়ে হতাশ তার পরিবারের সদস্যরা। ফেলানী হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেওয়ার খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম।
তারা ফেলানী হত্যা মামলাটি ভারতের উচ্চ আদালতে নিয়ে সুবিচারের জন্য ভারত সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। পাশাপাশি ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার পেতে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহযোগিতাও কামনা করেন।
ফেলানী হত্যা মামলার আইন সহায়তাকারী ও কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন জানান, তিন দিন একটানা পুনর্বিচারিক কার্যক্রম চলার পর বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আগের রায় বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন বিএসএফর অধিকারী সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বিচারিক প্যানেল।
তিনি আরো জানান, এটি ন্যায় বিচার নয়। বাংলাদেশের মানুষ আশা করেছিল যে যেহেতু এটি একটি পুনর্বিচার সেহেতু অমিয় ঘোষের সর্বোচ্চ শাস্তিই ছিল প্রত্যাশিত রায়। এ রায়ের মধ্য দিয়ে বিএসএফকে সীমান্তে নিরীহ মানুষকে হত্যার বৈধ্যতা দেওয়া হলো।
কুড়িগ্রামের ৪৫ বিজিবির পরিচালক লে. কর্নেল জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি শুনতে পেয়েছেন তবে রায়ের কপি না পাওয়া পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো ঠিক হবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগের রায় বহাল রেখে ভারতের কোচবিহারে বিএসএফর বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দিয়ে আগের রায় বহাল রাখে বিএসএফ বিশেষ আদালত।
এর আগে বিজিবি-বিএসএফর দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্তে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করে বিএসএফর বিশেষ আদালত। কয়েক দফা মুলতবির পর গত ৩০ জুন বিএসএফর বিশেষ আদালতে পুনর্বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। কঠোর গোপনীয়তায় তিন দিন বিচারিক কার্যক্রম চলার পর এ রায় ঘোষণা করা হয়।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয় বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুন। এ হত্যাকাণ্ডে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমসহ মানবাধিকার কর্মীদের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠে। ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারের বিএসএফর বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয় বিএসএফর বিশেষ আদালত।
বিডি-প্রতিদিন/৩ জুলাই ২০১৫/শরীফ