পৈশাচিক নির্যাতনে শিশু সামিউল আলম রাজনকে খুনের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন ময়না চৌকিদার। জবানবন্দিতে তিনি খুনের দায় কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিদুল ইসলাম ও পাভেল নামের আরেক যুবকের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন।
তবে নির্যাতনের আগে তিনি রাজনকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে চড় থাপ্পড় মারা ও ফোনে কামরুলদের ডেকে আনার কথা স্বীকার করেছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক আনোয়ারুল হক তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার জানান, ময়না চৌকিদার জবানবন্দিতে বলেছে, সে কান্দিগাঁও ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলামদের মালিকানাধীন ওয়ার্কশপে চৌকিদারের কাজ করত। ঘটনার দিন পার্শ্ববর্তী একটি দোকানের চৌকিদার জানায়, তাদের ওয়ার্কশপে রাজন চুরি করতে ঢুকেছে। তখন সে রাজনকে ধরে এনে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে চড় থাপ্পড় মেরে মোবাইল ফোনে ওয়ার্কশপের মালিক কামরুল ও তার ভাইদের খবর দেয়।
কামরুল, তার ভাই মুহিদুল ও পাভেল নামের এক যুবক এসে রাজনকে বেধড়ক মারধর করে। তাদের পিটুনিতেই রাজন মারা যায়। তার মারধরে রাজনের মৃত্যু হয়নি- জবানবন্দিতে ময়না চৌকিদার এমনটা দাবি করেছে। তবে সে কামরুলদের মারধর করার সময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে বলে আদালতকে জানায়।
গত ১৪ জুলাই রাতে রাজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ময়না চৌকিদারকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে দেন। ১৫ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডের সময় শেষ হওয়ার আগেই ময়না আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় মুহিদুল ইসলাম, তার ভাই আলী হায়দার, মুহিদের শ্যালক ইসমাইল হোসেন আবলুছ, দুলাল মিয়া ও নির্যাতনের ভিডিও চিত্রগ্রাহক নুর মিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এ ছাড়া মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগম, দুই প্রত্যক্ষদর্শীসহ এখন পর্যন্ত এ মামলায় ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন যুবক। পরে ওই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তারাই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়।
বিডি-প্রতিদিন/২০ জুলাই ২০১৫/ এস আহমেদ