সিলেটে পৈশাচিক নির্যাতনে খুন হওয়া শিশু সামিউল আলম রাজন খুনের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মুহিত আলম। নিজে রাজনকে নির্যাতন না করলেও খুনের পর ছোট ভাই কামরুলের নির্দেশে সে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে। গাড়ি দিয়ে লাশ অন্যত্র ফেলে দেয়ার চেষ্টাকালে জনতার হাতে আটক হয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছে মুহিত। আজ বুধবার বেলা ১টা থেকে প্রায় ৪ ঘণ্টা মুহিতের জবানবন্দি গ্রহণ করেন সিলেট মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক আনোয়ারুল হক।
মুহিতের জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার বলেন, মুহিত তার জবানবন্দিতে আদালতকে জানিয়েছে রাজনকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে কামরুল তাকে ফোন দেয়। কামরুল ফোনে জানায় এক চোরকে সে বেঁধে রেখেছে। খবর পেয়ে মুহিত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় কামরুলসহ কয়েকজন মিলে রাজনকে মারধর করছে। একপর্যায়ে রাজন অচেতন হয়ে পড়ে। তখন রাজনকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যেতে ময়না চৌকিদার ও মুহিতকে নির্দেশ দেয় কামরুল। মাইক্রোবাসে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাজন মারা গেলে লাশ গুম করতে মোবাইল ফোনে নির্দেশ দেয় কামরুল। কিন্তু লাশ গুম করার আগেই জনতার হাতে ধরা পড়ে যায় মুহিত। আর পালিয়ে যায় ময়না চৌকিদার।
তদন্ত কর্মকর্তা সুরঞ্জিত তালুকদার জানান, মুহিত তার জবানবন্দিতে দাবি করেছে সে রাজনকে মারধর করেনি। তবে ভাইয়ের নির্দেশে লাশ গুম করার চেষ্টা করে সে অপরাধ করেছে। মুহিত নিজের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তার জবানবন্দি থেকে নির্যাতনে জড়িত ছিল এমন আরো কয়েকজনের নাম প্রকাশ পেয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করেননি তদন্ত কর্মকর্তা।
এদিকে, মুহিতের আগে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে নির্যাতনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা দুলাল মিয়া, ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর আহমদ, নির্যাতনকারী ময়না চৌকিদার ও প্রত্যক্ষদর্শী আজমত ও ফিরোজ।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলীর কুমারগাঁওয়ে চোর অপবাদ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে খুন করা হয় ১৩ বছরের শিশু রাজনকে।
বিডি-প্রতিদিন/২২ জুলাই ২০১৫/শরীফ