একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় বহাল রাখায় প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ হরতালের যাক দেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ।
এর আগে, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ মুজাহিদের রিভিউ আবেদন খারিজ করে ফাঁসির রায় বহাল রাখেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘জামায়াতকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য সরকার জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করেছে। সরকারী ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ। সরকার তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মিথ্যা অভিযোগে ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দায়ের করে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীও নেই। এতদসত্ত্বেও সরকারের মিথ্যা মামলায় মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত মুজাহিদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলাধীন কোনো থানায় বা বাংলাদেশের অন্য কোন থানায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সংঘটিত কোনো অপরাধের জন্য কোনো মামলা হয়েছে, এমন কোনো তথ্য তিনি তার তদন্তে পাননি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এটাও স্বীকার করেছেন যে, মুজাহিদ আলবদর, শান্তি কমিটি, রাজাকার বা আল শামস বা এই ধরনের কোনো সহযোগী বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, এমন কোন তথ্য তিনি তার তদন্তকালে পাননি।’
বিবৃতিতে মকবুল আহমাদ অভিযোগ করেন, ‘গতকাল রাষ্ট্রের এটর্নি জেনারেল গণমাধ্যমে প্রদত্ত বক্তব্যে স্বীকার করেছেন যে, মুজাহিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। বাংলাদেশের জনগণসহ গোটা বিশ্ববাসীর নিকট এ কথা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, বিনা অপরাধে এবং আনীত অভিযোগসমূহ সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে মুজাহিদকে সরকারী পরিকল্পনায় হত্যার উদ্দেশ্য এ দণ্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোটা জাতি এ রায়ে হতাশ হয়েছে।’
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘এ অন্যায় ও ষড়যন্ত্রমূলক সরকারী হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আগামীকাল ১৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সারা দেশে সর্বাত্মক শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করছি। তবে হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফার্মেসী ইত্যাদি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।’
বিডি-প্রতিদিন/১৮ নভেম্বর, ২০১৫/মাহবুব