যুদ্ধাপরাধী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেলারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর বন্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
শুক্রবার নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে এমনই মন্তব্য করেছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউর এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মারাত্মক অপরাধগুলোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা ও বিচারের আওতায় আনা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই বিচার আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হতে হবে।অন্যায্য বিচার প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। বিশেষ করে যখন মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তি দেওয়া হয়।'
বিবৃতিতে বলা হয়, 'মুজাহিদ-সাকার মৃত্যুদণ্ড আন্তর্জাতিক আদালতের আগের মামলার মতোই ত্রুটিপূর্ণ। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে দ্রুত প্রণীত আইনের মাধ্যমে, যা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ।
এতে আরও অভিযোগ করে বলা হয়, আদালত প্রাঙ্গন থেকে মামলার বিবাদীর প্রধান সাক্ষীকে সরকারি বাহিনীর হাতে অপহরণের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়ার পরও মানবতাবিরোধী অপরাধে আরেক অভিযুক্ত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের আদেশ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শী ও অন্যান্য প্রমাণের স্বল্পতা এবং রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীর অসঙ্গতিপূর্ণ বিবৃতি সত্ত্বেও ২০১৫ সালের এপ্রিলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে।'
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, 'মুজাহিদ ও সাকার বিচার প্রক্রিয়ায়ও একই অভিযোগ রয়েছে- প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ও দলিলপত্রাদির স্বল্পতা। মুজাহিদের আইনজীবী তার পক্ষে ১৫০০ সাক্ষীর নাম দিয়েছিলেন। আদালত অবশ্য যৌক্তিকভাবেই ১৫০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু অযৌক্তিকভাবে মাত্র তিনজনকে মুজাহিদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তার অনুগতদের নিপীড়নে প্ররোচিত করার অভিযোগে। অথচ তার অনুগতদের কোনো সাক্ষ্যই গ্রহণ করা হয়নি। রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পরপরই বাড়িতে পুলিশি অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে মুজাহিদের এক আইনজীবী লুকাতে বাধ্য হয়েছেন।'
এর আগে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা, মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করার আগে তা বন্ধ করতেও আহ্বান জানিয়েছিল এইচআরডব্লিউ।
বিডি-প্রতিদিন/২০ নভেম্বর, ২০০৫/মাহবুব