প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে যতো ষড়যন্ত্রই করুক বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ রোধ করতে পারবে না। বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক মন্দা চলছে বাংলাদেশ তখন এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ১৪ ভাগে নামিয়ে আনবো। আর ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। নিম্ন বলে কিছু থাকবে না। আমরা উচ্চে উঠব। আমার কারো কাছে মাথা নত করে থাকবো না। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব সভায় মাথা উঁচু করে থাকব। এজন্য যা করার দরকার করব। এখন আর কেউ বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারে না।
দশম জাতীয় সংসদের ৮ম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সংসদ নেতা বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার শেষ করতে না পারলে এই দেশ অভিশাপমুক্ত হতে পারবে না। এই বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে বলে বাংলাদেশ অভিশাপমুক্ত হতে পারছে। অভিশাপমুক্ত হতে পারছে বলেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দেশে আইএস আছে, জঙ্গী আছে-এ ধরণের ঘোষণা দেওয়ার একটা পায়তারা চলছিলো। সেটা সফল হয়নি। পৃথিবীর অনেক মুসলিম অধ্যুষিত দেশেই কোন না কোন অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। একমাত্র বাংলাদেশেই এখন অনেকটা নিরাপদ আছে।
বাংলাদেশে আইএস বা জঙ্গীরা যেন আশ্রয় না পায় সে জন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্বের মুসলমি দেশগুলো জঙ্গি ও আইএস মোকাবেলা করছে। এরমধ্যে একমাত্র বাংলাদেশই শান্তিতে আছে। ৫৪ হাজার বর্গমাইলের দেশে ১৬ কোটি মানুষের বসবাস। সেখানে যে আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রাখতে পেরেছি। অথচ সেখানে খালেদা জিয়ার আমলে প্রতিদিনই খুন-খারাবি লেগেই থাকতো।
এসময় সংসদ নেতা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি নেত্রী ঘোষণা দিলেন এই সরকারকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। উনি থাকলেন অফিসে। প্রায় ৬৫ জন মানুষ নিয়ে উনি ৩ মাস গুলশান অফিসে থাকলেন। অবরোধ ঘোষণা করলেন। উনি এখন পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহার করেন নাই। অবরোধ এখনও আছে। এই অবরোধের নামে উনি প্রায় ৫০০ জন মানুষ হত্যা করলেন। প্রায় ২ হাজার ৫৮৩টি গাড়ি উনি পুড়িয়েছে। ১ হাজার ১৩৮টি প্রাইভেট গাড়ি, ১৮টা রেল, ৮টা লঞ্চ পুড়িয়েছে। এইভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বাংলাদেশে। দুর্ভাগ্য হলো ২০১৩ সালে নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি আন্দোলনের নামে শত শত মানুষকে হত্যা করেছিলো। নির্বাচনকে বন্ধ করতে চেয়েছিলো। এরপর উনি বিদেশ গেলেন তারপর দেখি বাংলাদেশে বিদেশি হত্যা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট সক্রিয় এবং তারা কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, এই হরতাল-অবরোধ সত্ত্বেও আমরা ৬ দশমিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। প্রায় দেড় কোটি বেকারকে আমরা কর্মসংস্থান দিতে সক্ষম হয়েছি। ৩৮ লাখের মতো বিদেশে পাঠিয়েছি। সারা বাংলাদেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল করবো। সমগ্র দেশব্যাপী এই শিল্প গড়ে তুলতে চাই। তাহলেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বিডি-প্রতিদিন/২৩ নভেম্বর, ২০১৫/মাহবুব