লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ। ভরা মৌসুমে ইলিশ না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। রাত দিন নদীতে জাল ফেলেও দুই বেলা ভাত ও সপ্তাহ শেষে এনজিওর ঋণের টাকা জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এখানকার অনেক জেলেদের। তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অকপটে বললেন, নদীতে মাছ পাওয়া যাচ্ছে বেশ। এক পর্যায়ে নাব্যতা সংকটকে সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করলেও জেলেরা সুফল পাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নদীতে ইলিশ মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন প্রায় ৪৫ হাজার জেলে। মেঘনা উপকূলীয় এ অঞ্চলের এসব জেলেরা নদীতে মাছ ধরার পর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীর হাট, কমলনগরের মতির হাট, মাতাব্বর হাট ও রামগতির আলেকজান্ডারের মাছ ঘাটসহ অন্তত ২০টি ঘাটে তা বিক্রি করেন। প্রতিদিন সকালে কিংবা রাতে নদীতে গিয়ে জাল ফেলে বিকালে কিংবা পর দিন সকালে তীরে ভিড়েন তারা। বর্তমানে ইলিশ আহরণের ভরা মৌসুম চলছে।
জেলেরা জানান, নৌকা ও জাল নিয়ে নদীতে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরতে হয় তাদের। নদীতে মাছ কম হওয়ায় কেউ কেউ যৎসামান্য ইলিশ ফেলেও নৌকার তেল খরচ ও দুই বেলা ভাত খাওয়ার হিসাব মিলেনা এখন।
ব্যাংক ও এনজিও ঋণের জালে আটকা পড়ে অনেকে তা পরিশোধ না করতে পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ বা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে তারা জানান।
এমন পরিস্থিতি ইলিশ কিনতে ঘাটে গিয়ে সাধারণ ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন, চড়া দামের কারণে ইলিশ ছাড়াই বাড়ি ফিরছেন অনেকেই।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর এ সময়ে প্রত্যেকটি ঘাটে ৫ থেকে ১৫ ও ২০ টন মাছ বেচা কেনা হত, যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কিনতেন। বর্তমানে তা ১ টন থেকে দেড় টনে নেমে এসেছে। যা চাহিদা অনুযায়ী অনেক কম। প্রতি হালি ইলিশ প্রকার ভেদে ৪০০/৫০০ টাকা, ৮০০/৯০০ টাকা, ১০০০/১২০০ টাকা ও ৪ হাজার থেকে ৪৫০০ টাকা বিক্রি করা হয় এখন। মাছ কম হওয়ায় জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলে দাবি করেন তারা।
তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম মহিব উল্যাহ বললেন, নদীর নাব্যতা সংকটে মেঘনায় মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে, যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তা আগের তুলনায় কম নয় দাবি করে তিন বলেন, প্রতি বছর এ জেলায় প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হচ্ছে এবং জেলেরা এর সুফল পাচ্ছেন।
বিডি-প্রতিদিন/২১ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব