প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্থানীয় সরকার পদে নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংগঠন করারও সুযোগ পাবেন। তবে তারা জাতীয় সংসদের সদস্য পদ ও রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিসহ প্রজাতন্ত্রের কোনো কাজে নিয়োগ লাভ করতে পারবেন না। বিভিন্ন মহল থেকে আপত্তি ওঠায় নাগরিকত্ব আইনের খসড়ায় এ বিষয়ে সংশোধন আনা হয়েছে। আজ রাজধানীতে সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনার শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, আইনে এমন কোনো ধারা রাখা হবে না, যাতে প্রবাসীরা ‘রাষ্ট্রহীন’ হয়ে পড়েন। যে দেশের নাগরিকই হোক, প্রবাসীদের তাঁদের সব সম্পত্তির ওপর অধিকার থাকবে। এমন কোনো আইন হবে না, যা জনবান্ধব নয়।
প্রবাসী নাগরিকদের স্থানীয় সরকার পদে নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সংগঠন করার বিষয়ে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত ‘নাগরিকত্ব আইন’-এ সীমাবদ্ধতা রাখা হয়েছিল। তবে ভেটিংয়ের (যাচাই) সময় এ বিষয়টি তুলে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরো কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি ওঠায় তা সংশোধন এবং কিছু ধারা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মন্ত্রিসভা নাগরিকত্ব আইন ২০১৬-এর খসড়াটি অনুমোদন করে, যা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়। প্রস্তাবিত আইনটিতে ৫-এর (২) (ক) উপধারায় বলা হয়েছে, বংশসূত্রে নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য জন্মের দুই বছর বা আইনটি বলবৎ হওয়ার দুই বছরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে জন্মনিবন্ধন করতে হবে। ফলে দুই বছরের মধ্যে জন্মনিবন্ধনে ব্যর্থ হওয়া দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রবাসীরা বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। তা ছাড়া এ ধারায় যেভাবে শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে, তাতে তৃতীয় প্রজন্মের প্রবাসীদের (যাঁরা পিতার বংশসূত্রে নাগরিক হয়েছেন) বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার কোনো সুযোগই পাবেন না।
আইনমন্ত্রী এ ধারা সংশোধনের উল্লেখ করে বলেন, আমরা ভেটিংয়ের সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিবন্ধন করতে হবে, কিন্তু কোনো সময় বেধে দেয়া থাকবে না। এ ছাড়া এ ধারায় বলা ছিল, কোনো ব্যক্তি বংশসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হবেন না যদি তাঁর পিতা বা মাতা তার জন্মকালে বাংলাদেশ সরকারের অধীন কিংবা প্রেষণে বা লিয়েনে অন্যত্র চাকরিতে নিয়োজিত না থাকেন। এ ধারাটিও তুলে দেয়া হবে।
সেমিনারটির আয়োজন করে সেন্টার ফর নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশি নামে প্রবাসীদের একটি সংগঠন। সেমিনারে প্রবাসী ও বিশেষজ্ঞরা প্রস্তাবিত আইনের বেশ কিছু দুর্বল দিক তুলে ধরেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার