কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পূর্বঘোষিত আজ বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভ-সমাবেশ দুইদিন পিছিয়েছে বিএনপি। অনুমতি না পাওয়ায় কর্মসূচিটি আগামী শনিবার (৭ জুলাই) পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিএনপি’র উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ সমাবেশ করার কথা ছিল। এই কর্মসূচিটি আগামী শনিবার (০৭ জুলাই) বেলা ২টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে যথাসময়ে এই প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
একই দাবিতে আগামী ৯ জুলাই (সোমবার) ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। অনশন কর্মসূচিটি ওইদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
ইতোমধ্যে ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স-রমনায় এবং ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে উক্ত প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালনের জন্য বিএনপি’র পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। ঢাকায় উক্ত দুই স্থানের মধ্যে যেকোনো একটিতে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালিত হবে।
এদেশে গণতন্ত্রের-জমি এখন সম্পূর্ণভাবে বেদখল মন্তব্য করে বিএনপির মুখপাত্র রিজভী বলেন, 'প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে দমিয়ে রাখতে পুলিশ ও দলীয় ক্যাডারদের নগ্নভাবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক খেতাবপ্রাপ্ত বাকশালী সরকার।'
তিনি অারও বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর থেকে অবৈধ সরকার জনআতঙ্কে ভুগছে। একমাত্র সরকার দলীয় কর্মকাণ্ড ছাড়া আর কাউকে সভা-সমাবেশ কিংবা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না সরকার। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনকালে যেভাবে ছাত্রলীগ ও পুলিশের নির্যাতন ও নিপীড়ণের শিকার হচ্ছে, যেভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষক ও উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের পুলিশি তাণ্ডবের শিকার হতে হয়েছে, যেভাবে শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের হাতে ছাত্রীরা লাঞ্ছিত হয়েছে, ছাত্রলীগের এসব তাণ্ডব লগি-বৈঠারই পূণরাবৃত্তি বলে দেশবাসী মনে করে।
প্রতিবাদী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এবারে অবৈধ ক্ষমতার বিবর্তনে ছাত্রলীগ ভয়াল প্রেতাত্মা হয়ে ভীষণ মূর্তি ধারণ করেছে। যোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বাকশালী সরকারের আগ্রাসী থাবায় সারাদেশই এখন বধ্যভূমি। গুম, খুন, অপহরণ, বিচার বহির্ভূত হত্যা, গ্রেফতার, নির্যাতন ও দলীয় সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবই হলো এখন শেখ হাসিনার টিকে থাকার অবলম্বন। গণমাধ্যমে প্রকাশ গুম ও গ্রেফতার আতঙ্কে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা ভয়ে ক্যাম্পাসে যেতে পারছেন না। অথচ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার উন্নয়নের আষাঢ়ে গল্পের যে লম্বা ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন-যেটির সাথে বাস্তবতা অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সকল শিক্ষাঙ্গনগুলোতে এখন ছাত্রলীগ ও পুলিশের তান্ডবে বিভিষিকাময় অবস্থা বিরাজ করছে। গত পরশু দিন পুলিশ প্রতিবাদকারীদের ঠেকাতে যেভাবে প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়েছিল তাতে মনে হয়েছে তারাই যেন মানববন্ধন করছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম