শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করার বিষয়টি অতি আলোচিত ও সবার জানা। আমরা ২০১০ সারে ২৪শ' স্কুল কলেজ মাদ্রাসা এমপিওভুক্তি করেছিলাম। পরে অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা ছাড় না দেয়ায় আমরা এমপিওভুক্তি করতে পারিনি। এবার অর্থমন্ত্রী রাজি হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতামত নিয়ে আগামী মাসের মধ্যে এমপিওভুক্তির বিষয়ে আমরা ফয়সালা করে দেব।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনে রবিবারের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্বে আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের (পটুয়াখালী-৩) সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, এমপিও একটি স্থায়ী ব্যাপার। মাসে মাসে তাদের বেতন দিতে হবে। কেউ রিটায়ারমেন্টে গেলে পরবর্তী যে আসবে সে এই বেতনটি পাবে। এর ফলে অর্থমন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া আমরা এটা করতে পারি না। তিনি বলেন, এবার অর্থমন্ত্রী রাজি হয়েছেন। কিছু টাকা বরাদ্দও দিয়েছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমেধ্যে আমরা প্রকাশ্যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছি, যারা এমপিওভুক্ত হতে চান তারা অনলাইনে আবেদন করবেন। সেখানে একটি ক্রাইটেরিয়া দেয়া হয়েছে, সেই নীতিতেই বাছাই করা হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর মতামত নিয়ে আগামী মাসের মধ্যে এটা আমরা ফয়সালা করে দেব। এখন সংখ্যা বা অন্য কিছু বলছি না। কারণ এতে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি এমপিওভুক্তি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য। এ সময় তিনি জানান, গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্বগ্রহণের পরই সারাদেশে এক হাজার ৬২৪টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। অবশিষ্ট নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করতে ইতোমধ্যে ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো এবং এমপিও নীতিমালা ২০১৮’ জার করা হয়েছে। এই নীতিমালা অনুসরণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা নিশ্চিতে আসছে ‘প্রশ্ন ব্যাংক’
মহিলা এমপি বেগম লুৎফা তাহেরের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সরকারের প্রশ্নপত্র প্রণয়নে গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে সকল বোর্ডের সমন্বিত উদ্যোগে ‘প্রশ্ন ব্যাংক’ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরো জানান, বর্তমানে বোর্ডসমূহের প্রশ্ন ব্যাংক তৈরির নিমিত্ত সফটওয়ার তৈরির কাজ চলছে। সফটওয়ারটি তৈরি হলে বাংলাদেশ পরীক্ষা মূল্যায়ন ইউনিট (বিইডিইউ) কর্তৃক প্রশিক্ষণপপ্রপ্ত শিক্ষকরা অনলাইনে তৈরিকৃত প্রশ্নপত্র প্রশ্নব্যাংকে পাঠাবেন। সেই প্রশ্নগুলো থেকে সুপার মডারেটর কর্তৃক মডারেশন হয়ে পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত প্রশ্নপত্র তৈরি হবে। এ ফলে পাবলিক পরীক্ষাসমূহের প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা নিশ্চিত করা সম্বব হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের পরিকল্পনা নেই
এদিকে একাধিক সংসদ সদস্যের দাবির প্রেক্ষিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজার রহমান জানান, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হয়েছে। তারপরও কিছু কিছু বিদ্যালয় এখনো সরকারিকরণের বাইরে রয়ে গেছে। এর মধ্যে আমরা ৪০০ এর মতো আবেদন পেয়েছি। কিন্তু আমার পক্ষে একটিও সরকারিকরণ করা সম্ভব নয়। সরকারের এই মেয়াদে আর প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের পরিকল্পনা নেই বলেও জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮/মাহবুব