তথ্যমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করেছে সম্পাদক পরিষদ। অংশীজনের সুপারিশ অগ্রাহ্য করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার প্রতিবাদে আগামী শনিবার মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। এ আইন নিয়ে উদ্বেগ দূর করতে ৩০ সেপ্টেম্বর সম্পাদক পরিষদসহ অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে কর্মসূচি স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
সম্পাদক পরিষদকে দেয়া তার চিঠির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পরিষদের পক্ষে এক বিবৃতিতে সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম কর্মসূচি স্থগিতের তথ্য জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদ মাধ্যমের সব অংশীজনই মনে করেন সম্প্রতি জাতীয় সংসদে সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক আঘাত। আইনটি পাসের আগেও আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা সরকারকে জানিয়েছি। এমনকি সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে সম্পাদক পরিষদ আইনের কয়েকটি ধারা সম্পর্কে তাদের সুনির্দিষ্ট আপত্তি ও প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের সাংসদরাও আইনটি এভাবে পাস না করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সব বিরোধিতা ও আপত্তি উপেক্ষা করে সরকার কণ্ঠভোটে যেভাবে আইনটি পাস করে তা সংবাদ মাধ্যমের জন্য দুঃখজনক ঘটনা হিসেবেই বিবেচিত হবে। এ অবস্থায় আমাদের রাজপথে প্রতিবাদ জানানো ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না। প্রতিবাদের অংশ হিসেবেই সম্পাদক পরিষদ শনিবার ২৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি নিয়েছিল। কেবল সম্পাদক পরিষদই নয়, অনুরূপ কর্মসূচি নিয়েছে সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন।
এই প্রেক্ষাপটে তথ্যমন্ত্রী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ আমলে নিয়ে সম্পাদক পরিষদসহ সংবাদ মাধ্যমের অংশীজনের সঙ্গে ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচনায় বসার যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে তার অনুরোধে ২৯ সেপ্টেম্বর সম্পাদক পরিষদের কর্মসূচিও স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা বরাবরই আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। এর আগেও মাননীয় মন্ত্রী যখন কোনো বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে আমরা অংশ নিয়েছি; যদিও সেসব আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলা যাবে না।
এবারেও আমরা আলোচনার মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধকারী ধারাগুলো অপসারণ করা হবে আশা করি। কিন্তু সেটি যদি না হয় আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহতই রাখতে হবে। আশা করি সরকার সংবাদ মাধ্যমের অংশীজনের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠাকে আমলে নিয়ে দ্রুত আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেবেন।
বিডি প্রতিদিন/২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮/আরাফাত