নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে গতকাল শুক্রবার ‘দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার মাধ্যমে সরকারি সেবায় উদ্ভাবনী’ (Public Service Innovation through South-South Network) শীর্ষক এক কর্মশালার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘের দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক কার্যালয় ও আস্তানা সিভিল সার্ভিস হাব-কে সাথে নিয়ে সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন এই কর্মশালার আয়োজন করে । জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়াবলী বিভাগ এবং এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কর্মশালা আয়োজনে সহায়তা করে।
কর্মশালার প্রেক্ষাপট উপস্থাপন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং জাতিসংঘের দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক কার্যালয়ের পরিচালক ও জাতিসংঘ মহাসচিবের দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক বিশেষ দূত জর্জ সেডিয়েক (Jorge Chediek)।
এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এর প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. অ্যালেক্স ব্রিলিয়ানটেস জুনিয়র (Alex Brilliantes Jr) এর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় মডারেটর ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী।
কীভাবে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার মাধ্যমে সরকারি সেবায় উদ্ভাবনী চিন্তা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানো যায় রাষ্ট্রদূত মাসুদ তাঁর বক্তব্যে সে বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা ব্যবহার করে সরকারি সেবাকে কীভাবে আরও আধুনিক ও জনমুখী করা যায় সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিশেষ করে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণের দেশগুলো এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে।’ স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের সাথে সাথে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা ফোরামে অগ্রণী ও গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে বলে স্থায়ী প্রতিনিধি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চীনসহ দক্ষিণের এগিয়ে থাকা দেশগুলো দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকারি সেবার উৎকর্ষ সাধনে তথ্য-প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময় করতে পারে-যা সামগ্রিকভাবে এ অঞ্চলের দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।
কর্মশালার আলোচকগণ সরকারি সেবাকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে উল্লেখ করেন। সরকারি সেবার আধুনিকায়ন, উদ্ভাবন ও গতিশীলতা বৃদ্ধিতে সাউথ-সাউথ ও ট্রাইয়াঙ্গুলার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বৃদ্ধির উপর জোর দেন।
কর্মশালায় প্রো-অ্যাকটিভ ই-সার্ভিস, ফরেন এমপ্লয়মেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম, কমিউনিটি ক্লিনিক ইন বাংলাদেশ, বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স, ফিউচার ওয়ার্ক ইন এশিয়া, ডিজিটাল স্কিল ফর ওয়ার্ক, ইয়ুথ লিড ডেভোলপমেন্ট এন্ড পার্টিসিপেশন মডেল, ক্যারিবিয়ান এডুকেশন ফর এমপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম এবং গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন ডিসেন্ট জবস্ ফর ইয়ুথ ইন নাইজেরিয়াসহ বারোটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণ তথ্য উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদে নেতৃত্বে সাত সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
বিডি-প্রতিদিন/০১ ডিসেম্বর, ২০১৮/মাহবুব