জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিজ ভূমিতে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসনের জন্য এশিয়ার ২৭টি দেশ নিয়ে গঠিত ফোরাম 'সিআইসিএ' অংশীদারদের স্বতস্ফূর্ত সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বুধবার তাজাকিস্তানের রাজধানী দুশানবের নাভরুজ প্রাসাদে ফোরামের পঞ্চম সম্মেলনে ভাষণ প্রদানকালে তিনি এ সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। আমরা এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই, এজন্য তাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছি। তবে এতে যদি সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে এই সংকট গোটা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।রোহিঙ্গা সংকটের ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভয়ঙ্কর গণহত্যা ও ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লংঘনের শিকার রোহিঙ্গা জনগণের জন্য বাংলাদেশ তার দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। জাতিগত নিধন ও সীমাহীন মানবিক বিপর্যয়ের এই ভয়াবহ ঘটনা পাঠ্যবই নজির হিসেবে স্থান পেয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা নিজ ভূমি থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় চাওয়ার পরে মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
এই অঞ্চলে বিভিন্ন ইস্যুতে একত্রে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমরা সহিংস চরমপন্থী,আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, জোরপূর্বক উদ্বাস্তু অভিবাসীদের সীমান্ত অতিক্রম করার মতো অনেক গুরুতর সমস্যার মোকবেলা করছি। এজন্য এসব ইস্যুও মোকবেলায় সাড়া দিতে সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অনিয়মিত অভিবাসন, মাদক পাচার, আঞ্চলিক দাবি, জাতিগত সংঘাত, বিচ্ছিন্নতাবাদ, অর্থনৈতিক সমস্যা এবং দৃশ্যমান জলবায়ু পরিবর্তন এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তা ক্রমাগত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, এশিয়ার শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার উন্নয়নে সহযোগিতা জোরদারে বহুজাতিক সংস্থা সিআইসিএ গঠিত হয়েছে। এই জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত প্রচেষ্টা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি এশিয়ার নিরাপত্তা ও সহযোগিতার ইস্যু সমাধানে সিআইসিএ সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এশিয়ায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এগুলো অর্জন করতে পারি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গৃহীত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়’ একথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আশ্বস্ত করেন যে, বাংলাদেশ সিআইসিএ লক্ষ্য ও মূলনীতি সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, এই নীতি অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তি,স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন গুরুত্ব দিয়ে সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে। তিনি বলেন,এই ক্ষেত্রে সিআইসিএ আমাদের জন্য অত্যান্ত প্রাসঙ্গিক। সূত্র: বাসস
বিডি-প্রতিদিন/১৫ জুন, ২০১৯/মাহবুব