ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিস) ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজানের বিরোদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। আজ শনিবার ভোরে শ্রীমঙ্গল র্যাব ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলা নং ১৫।
থানার ওসি (তদন্ত) সোহেল রানা জানান, মামলায় একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, চার রাউন্ড গুলি ও নগদ দুই লক্ষ টাকা জব্দ দেখানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ আলমগীর বরেন, আসামি যেহেতু অন্য মামলায় ঢাকায় আটক আছে। তাই তাকে এই মামলায় শোন এরেষ্ট দেখাবো। পরে সিনিয়র স্যারদের সঙ্গে কথা বলে জিজ্ঞসাবাদের জন্য তাকে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
জানা যায়, ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যান মিজান। তিনি সীমান্ত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন এমন খবরের ভিত্তিতে গত শুক্রবার ভোররাতে শ্রীমঙ্গল শহরের গুহ রোড এলাকার ফজলুর রহমানের বাসা থেকে তাকে আটক করে র্যাব। আটকের সময় একটি বিদেশি অস্ত্র, চার রাউন্ড গুলি ও নগদ দুই লাখ টাকা ও হানিফ বাসের একটি টিকেট পাওয়া যায়। মিজানকে রাতেই ঢাকায় নিয়ে গিয়ে দুপুরে তার লালমাটিয়ার কার্যালয় ও আওরঙ্গজেব রোডে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকার চেক ও ১ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজ জব্দ করেছে র্যাব।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত মোহাম্মদপুরের আওরঙ্গজেব রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে এগুলো জব্দ করে র্যাব। র্যাব সদর দফরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বেই সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়া বৃহস্পতিবার মিজান ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ টাকা তুলেছেন, এ সংক্রান্ত তথ্যও পেয়েছে র্যাব। কিন্তু এ টাকা কোথায় আছে, সেসব উদ্ধারেও কাজ করছে র্যাব।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানায়, পাগলা মিজান ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি থেকে শুরু করে মানুষ হত্যার মতো গুরুত্বর অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাসায় যারা হামলা করেছিল তার একজন পাগলা মিজান। অথচ সময়ের স্রোতে পাল্টে গেছে অনেক কিছু। ভোল পাল্টিয়েছেন তিনি। পাল্টে ফেলেছেন নামটিও। তিনি হয়ে যান আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। মোহাম্মদপুরে গড়ে তুলেছেন অপরাধ সাম্রাজ্য। মাদক কারবার থেকে শুরু করে খুন-খারাবি পর্যন্ত নানা অপরাধমূলক কাজে তার নাম উঠে এসেছে বার বার। আওয়ামী লীগের এই নেতার বর্তমান নাম হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান হলেও আগে তার নাম ছিল মিজানুর রহমান মিজান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল