বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতারা প্রায়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা কী ছিল? মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তো এটা ছিল না যে, দেশের মানুষের অধিকার হরণ করে নেবেন। চেতনায় তো এটা ছিল না যে, ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের আগের রাতে ভোট নিয়ে চলে যাবেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তো এটা ছিল না যে, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দেবেন না। বাধা দেবেন, টিয়ারশেল মারবেন, গুলি করবেন; তারপরে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢোকাবেন। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তো ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, কথা বলার অধিকার রক্ষা করা হবে। সেই চেতনা আজকে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
এসময় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘নাটক ও ছেলেখেলা’ দাবি করে মির্জা ফখরুল ওই নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহবান জানান। তিনি বলেন, নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন, এটা এখন দেশের মানুষের একমাত্র দাবি।
তিনি বলেন, গত দশ বছর আমাদের ওপর অত্যাচার চলছে। কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। লক্ষাধিক মামলায় ২৬ লাখ আসামি করা হয়েছে। কোন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজনৈতিক দলকে এত বড় ত্যাগ শিকার করতে হয়, সেটা আমার জানা নেই।
নিজ দল ও শরিক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রেসক্লাবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কক্ষে বক্তব্য রেখে হবে না। গ্রামে-গ্রামে, মহল্লায়-মহল্লায় যান। কথাগুলো মানুষকে বলেন। শুধু ওপরের নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না।
এনপিপি সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিকল্প ধারার (একাংশের) সভাপতি নুরুল আমীন বেপারী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল