জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, শীতের শুরুতেই ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও করোনার প্রকোপ বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু দৃশ্যমান প্রস্তুতি নেই করোনা মোকাবিলায়। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা বলেন, সকল প্রস্থতি নেয়া হয়েছে। কিন্তু ঢাকা শহরে টাকা খরচ করেও বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সার্পোট মিলছেনা। বনানী কার্যালয়ে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারি ফোরাম নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের কারো শ্বাসকষ্ট হলে হাহাকার শুরু হয়ে যায়। বাবার চোখের সামনে সন্তান শ^াসকষ্টে মারা যায় কিন্তু কিছুই করার থাকেনা। প্রতিটি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ফ্রি করে দিতে হবে। ঢাকার বাইরে সরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা সেবা নেই বললেই চলে। শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেন সহায়তা মিলছেনা। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয় কিন্তু মানুষের জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই।
তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ভ্যাকসিন দিতে হবে। তিনি বলেন, দেশের হতদরিদ্র মানুষের পক্ষে পয়সা খরচ করে ভ্যাকসিন নেয়া হয়তো সম্ভব হবেনা। তাই সবার জন্য বিনামূল্যে করোনার ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে হবে। দেশের মানুষ ভ্যাকসিনের ব্যাপারে পরিচ্ছন্ন ধারণা চায়। দেশের মানুষ করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের ব্যাপারে আস্থাশীল হতে চায়। সরকারকে এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ জরুরি। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা সমমান হলে অবশ্যই ইবতেদায়ীকে জাতীয় করণ করতে হবে। ধনীদের সন্তানরা শিক্ষায় যে সুবিধা ভোগ করে, গরীব মানুষের সন্তানরা সেই সুযোগ পায়না। তাই দেশের বৈষম্য দূর হয়না। বৈষম্যহীন দেশ গড়তে সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে প্রয়োজনে বেসরকারি শিক্ষকদের বিসিএস পরিক্ষায় অংশ নিতে সুযোগ দিতে হবে। যারা উত্তীর্ণ হবে তারা সরকারি সুযোগ পাবে। যে সকল শিক্ষক উত্তীর্ণ হতে পারবেনা তারা পূর্বের স্কেলে সুযোগ পেয়ে পুনরায় যাতে পরিক্ষায় অংশ নিতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, যতই পদ্মাসেতু আর ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হোক শিক্ষার মানোন্নয়ন না হলে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ-ই প্রথম পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ বই বিতরণ করেছিলেন।
তিনি শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা যদি সার্টিফিকেট সর্বস্ব হয়, তাহলে প্রকৃত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করছেন না কেন? শিক্ষা ব্যাবস্থায় অটো প্রমোশন কখনোই কাম্য হতে পারেনা। লটারীর মাধ্যমে ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়া সুফল বয়ে আনবে না।
আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি মো. সাঈদুল হাসান সেলিম, মহাসচিব রেহান উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা মো. রফিকুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা হাফিজুর রহমান, আব্দুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন আজিজি, হারুন অর রশীদ প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন