দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চরের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। ফেরি দুর্ঘটনা, নাব্যতা সংকট ও ফেরি স্বল্পতার কারণে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে নৌরুট পার হচ্ছে যাত্রীবাহী বাস ও প্রাইভেটকার। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব যানবাহন পারের কারণে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে যাত্রীবাহী বাস, অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রাইভেটকার চালকদের মধ্যে। তবে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানগুলোকে। দুইদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে ফেরির নাগাল পাচ্ছে এসব যানবাহনগুলো।
আজ রবিবার দুপুরে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের তিন কিলোমিটার এলাকায় প্রায় তিন শতাধিক যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব যানবাহনগুলোর মধ্যে অর্ধশত বাস রয়েছে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানগুলোকে আটকে দিচ্ছে পুলিশ। ফেরিঘাটে যানবাহনের চাপ কমলে সিরিয়ালে এখান থেকে গাড়িগুলো ছেরে দিচ্ছে রাজবাড়ী ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় থেকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছে।
রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কল্যাণপুর এলাকায় আটকে পড়া ট্রাকচালক মো. সালাম শেখ বলেন, গোয়ালন্দ মোড়ে পুলিশ আমাদের আটকে দেয়। আমরা সেখান থেকে চার কিলোমিটার পেছনে এসে ফেরি পারের অপেক্ষায় রয়েছি। কখন ফেরিপার হতে পারবো তার কোনো নিশ্চয়তা আমাদের নেই।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে আটকে পড়া ফুলকপি বাহী ট্রাকচালক আকাশ বিশ্বাস বলেন, ফেরিঘাটের দুর্ভোগের কারণে আগেই ফেরিঘাটে পৌছে গিয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ ফেরিপারের অপেক্ষায় থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আগে না আসলে আড়ত ধরা সম্ভব হয় না। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে সবগুলো ফেরিঘাট সচলসহ ২০টি ফেরি চালু রাখার দাবি করেন তিনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসির) দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. জামাল হোসেন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। এই বিপর্যয় কিভাবে কাটবে সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে ঢাকায় আজ বড় একটি সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফেরি দুর্ঘটনার পর এই নৌরুট নিয়ে নতুন কোনো সিধান্ত আসতে পারে। তবে আপাপত দুর্ভোগ লাঘোবে কোনো সুখবর আমাদের কাছে নেই।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল