দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত ২৭টি প্রাথমিক স্কুল সরকারি হয়েছিল ৩ বছর আগে। এরপর ওসব স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের নামের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাদের এই খসড়া তালিকা প্রকাশেরও ১ বছর পার হয়েছে। কিন্তু প্রকাশ করা হচ্ছে না চূড়ান্ত নামের তালিকা। আর এ জন্য বেতন-ভাতাও পাচ্ছেন না ওসব স্কুলে কর্মরতরা।
এখন এই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ও বেতন-ভাতার দাবিতে আগামীকাল বুধবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করার কথা ভুক্তভোগী শিক্ষকদের। ইতোমধ্যে তারা আজ মঙ্গলবার একই দাবিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং এই মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম হাসিবুল আলমের কাছে লিখিত আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
এসব তথ্য জানিয়েছেন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের জানবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক মো. হাসমত আলি।
বাগেরহাটের মোংলার আন্ধারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শেখ নূর মোহাম্মদ বলছিলেন, ‘ভেবেছিলাম বিদ্যালয় সরকারি হয়েছে, এবার ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুখে জীবনযাপন করতে পারব। কিন্তু সুখের বিপরীতে বাবার পৈত্রিক মাটি বিক্রি করতে হয়েছে। এখন বাজারের যে অবস্থা, তারপর প্রতিদিন বাড়িতে এনজিও কর্মী এসে কিস্তির জন্য বসে থাকেন। এখন বেঁচে থাকার স্বপ্নটা হারিয়ে যাচ্ছে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বরাবর জমা দেওয়া আবেদনপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তিন ধাপে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ঘােষণা অনুযায়ী জাতীয়করণ করা হয় ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও জাতীয়করণ করা হয়। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকের নামের খসড়া তালিকা ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-১ অধিশাখা। এরপর ২০২০ সালের ১০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের নামের প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৩ বছর পার হলেও তাদের নামের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির ১২তম বৈঠকেও আলোচনা হয়। এই বৈঠকে তাদের বেতন ও ভাতা দেওয়ার সুপারিশ করেন কমিটির সভাপতি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ