রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির লাগাতর অবস্থান কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।
ব্যয়সাশ্রয়ী ও পরিবেশসম্মত এই গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে রনির ছয় দফা দাবি অবিলম্বে মেনে নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে নাগরিক সংগঠনটি।
বুধবার সংগঠনের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা ও রেলপথমন্ত্রীর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রেলখাতে কাঙ্খিত উন্নয়ন হচ্ছে না উল্লেখ করে জাতীয় কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, একটি দুর্নীতিবাজ ও শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে দীর্ঘদিনেও দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত এই পরিবহন ব্যবস্থা জনবান্ধব হতে পারেনি। জনভোগান্তি লাঘবে যাত্রীসংখ্যার ৫০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রির ফাঁদ পেতে প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে বেশির ভাগ টিকিট কালোবাজারে চড়াদামে বিক্রি করা হচ্ছে। গত ঈদুল ফিতরের আগে বিষয়টি র্যাব উদঘাটন করার পরও টিকিট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ।
বিবৃতিতে বলা হয়, যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ সত্ত্বেও দুটি ঈদ-মৌসুমসহ প্রায় সারা বছরই বিভিন্ন রেলপথে ট্রেনের মারাত্মক সূচি বিপর্যয়, বাথরুমসহ কোচের (বগি) ভিতরের নোংরা পরিবেশ এবং আসনগুলোর জরাজীর্ণ অবস্থা এই পরিবহনকে দিন দিন সংকুচিত করে ফেলছে। এভাবে আরামদায়ক রেলখাতকে জনবিমুখ করে তোলার সঙ্গে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট জড়িত এবং এর পেছনে রেল সংশ্লিষ্ট এক শ্রেণির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও হাত রয়েছে বলে জাতীয় কমিটি মনে করে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে মহিউদ্দিন রনি যে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন, তা অবিলম্বে মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
রেলখাতের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি বন্ধে গত ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে ছয় দফা দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে একাই অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। তার দাবিগুলো হলো:-
১. টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে।
৩. অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
৫. ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
৬. ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন