আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহীয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জেষ্ঠ্য পুত্র শেখ কামাল সর্বগুণে গুণান্বিত অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি একজন দক্ষ ছাত্র সংগঠক ছিলেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আধুনিক ফুটবলের জনক ছিলেন। শেখ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন। শেখ কামাল সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিভিন্ন নাটকে সুনিপুণ ভাবে অভিনয়ও করেছেন। শেখ কামাল অতি সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। তার চলাফেরা ও আচার আচরণে কেউ মনে করতো না যে শেখ কামাল একজন প্রধানমন্ত্রীর সন্তান।
শুক্রবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠানে টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপাড়ার প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ফলমূল, শাকসবজি ও সরিষা বীজ বিতরণ করা হয়।
এসএম কামাল হোসেন বলেন, শেখ কামাল ৬ দফার আন্দোলনে ছাত্রদের সুসংগঠিত করেছেন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদের সুসংগঠিত করেছেন, ৭০ এর নির্বাচনেও সাধারণ কর্মীর মতো নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ কামাল ভারতে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে। ইন্দিরা গান্ধী শেখ কামালের কথা শুনে বলেন, তুমি এখানে লেখাপড়া করো আমি ব্যবস্থা করছি। শেখ কামাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে চাই। অত্যন্ত চৌকস, মেধাবী তরুণ, যুবক ও পেশাজীবীদের মধ্য থেকে ৬১ জনকে নির্বাচিত করে ভারতের অফিসার ট্রেনিং উইংয়ে ন্যস্ত করে এবং শেখ কামাল দক্ষতা ও সফলতার সাথে ট্রেনিং সমাপ্ত করেন এবং বাংলাদেশ সরকার শেখ কামালকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে নিয়োগ দেন এবং শেখ কামাল দক্ষতার সাথে জেনারেল ওসমানীর এডিসির দায়িত্ব পালন করেন।
এসএম কামাল হোসেন আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর সন্তান হিসেবে শেখ কামালের কোন আত্ম অহংকার ছিল না এবং মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেও তিনি মুক্তিযুদ্ধের সনদ গ্রহণ করেননি। বাবা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে শেখ কামালকেও হত্যা করে খুনি ঘাতক চক্র।
তিনি আরও বলেন, ঘাতকরা বুঝতে পেরেছিল শেখ কামাল বেঁচে থাকলে বাংলার ছাত্র ও যুব সমাজ শেখ কামালের নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেই তাই ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধু সহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করেছিল। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলেই আজকে বাংলার মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ কামালের এই শুভ জন্মদিনে আমাদের শপথ নিতে হবে, যারা আজকে শেখ হাসিনার চলার পথকে কণ্টকাকীর্ণ করছে, ষড়যন্ত্র করছে, মিথ্যাচার করছে, অপপ্রচার করছে সেই ৭৫ এর খুনি ও ২১ শে আগস্টের খুনি জামাত বিএনপি সহ সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সদস্য সচিব এবং আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট সায়েম খান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন