আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেছেন, ১/১১ বিএনপির সৃষ্টি। মির্জা ফখরুলরা গণতন্ত্রের কথা বলেন। কেন ১/১১ সৃষ্টি হলো? এর জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী না বিএনপি? তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার একগুঁয়েমি ও তারেক জিয়ার যেন তেন প্রকারে ক্ষমতায় যাওয়ার লোভ ১/১১ সৃষ্টি করেছিল। ২০০৬ সালে নির্বাচনে জিতার জন্য বিএনপি ১ কোটি ২১ লাখ ভুয়া ভোটার করেছিলেন। ছাত্রদলের ১৫০ জন ক্যাডারকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তারা আজিজ মার্কা কমিশন করেছিলেন। গণতন্ত্র হত্যার জন্য একমাত্র বিএনপি দায়ী।
তিনি আরও বলেন, ফখরুলের নেতা তারেক রহমান দায়ী। আজ বিএনপি ভোট ডাকাতির কথা বলেন। বিএনপি ভোট চোর ও ভোট ডাকাতের দল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হা না ভোট করেছিলেন একজন মানুষও ভোট কেন্দ্রে যায়নি কিন্তু জিয়াউর রহমান দেখালেন ৯৮.৯ ভাগ ভোট হা তে পড়েছে। আমি মির্জা ফখরুলকে প্রশ্ন করতে চাই, কোন সংবিধানের বলে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হলেন, কে তাকে শপথ পড়ালেন? সেনাবাহিনীর একটি আইন আছে যে, সেনাবাহিনীর চাকরিরত অবস্থায় কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর আইন ২৯২ ও ২৯৩ ভেঙ্গে তথাকথিত নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসেন। আর খালেদা জিয়া টেবিলের উপর ব্যালট রেখে সিল মেরে ক্ষমতায় গিয়েছিলেন। সেই দল বিএনপি।
জাতীয় চার নেতার অন্যতম এম মনসুর আলী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও ৩ নভেম্বর উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকালে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলা পরিষদ মাঠে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেফাজ উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজীর পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোটেক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
এতে বক্তব্য রাখেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেড কেএম হোসেন আলী হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সামাদ তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি বীর মুক্কিযোদ্ধা আবু উউসুফ সূর্য, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি প্রকৌশলী তানভির শাকিল জয়, পৌর মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদার, যুবলীগের সভাপতি বিপ্লব, ছাত্রলীগের সভাপতি সায়েম তালুকদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করা হয়। পরে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। স্মরণ সভাটি রীতিমত জনসভায় রূপ নেয়। উপজেলা পরিষদের মাঠ ছাড়াও রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শোনেন।
এসএম কামাল হোসেন বলেন, আজকের বিএনপি বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করেন? বিএনপির বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির তালুকদার পদত্যাগ করে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অফিস ও বিশেষ ভবন মানে হাওয়া ভবনের কারণে আমি এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎও উৎপাদন করতে পারিনি, ৬০০০ কোটি টাকা হাওয়া ভবন বিদ্যুৎ খাত থেকে লুটপাট করেছে। কানসাটের কৃষককে বিদ্যুৎ দিতে না পেরে ২১ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। লজ্জা করে না? এতো বেহায়া আপনারা, জনগণ এক কান কেটে দিল আপনারা বলেন আর এক কান তো আছে, জনগণ এবার আপনাদের দুই কানই কেটে দিবে মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র তাদের জন্য নয়, যারা গণতন্ত্র কে হত্যা করে? বিজয়ের মাস ডিসেম্বর স্বাধীনতা বিরোধীদের পরাজিত করার মাস। এই মাস মুক্তিযোদ্ধাদের, স্বাধীনতা কামী মানুষের, এই মাস মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। এই বিজয়ের মাসে আপনাদের দোসর পাকিস্তানিরা মাথা নত করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে দেশ ছেড়েছিল, আপনারাও এই মাসে কোন ষড়যন্ত্র করতে পারবেন না জনগণ আপনাদের ঘরে তুলে দিবে।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, স্বাধীনতার পর চারটি বড় সংকট হয়েছে। তারমধ্যে ৭৫”র ১৫ আগস্ট, ১/১১, করোনা মহামারি এবং বর্তমানে বিশ্ব যুদ্ধের কারণে সংকট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা বর্তমান সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে ১০ ডিসেম্বর পর নাকি বিএনপি দেশ পরিচালনা করবেন। তারা তো নিজেরাই চলতে পারে না। দেশ চালাবে কিভাবে? বিএনপি একটি ঝামেলা। তারা দেশ চালাবে কিভাবে? আওয়ামী লীগকে একটানা ক্ষমতায় থাকতে হবে।
প্রকৌশলী তানভির শাকিল জয় এমপি বলেন, ৩ নভেম্বর জেলহত্যা শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, এটা ছিল জাতির পিতার বাংলাদেশকে পিছনের দিকে ঢেলে দেওয়া। জাতীয় চার নেতা জেলখানায় প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছেন তারা ছিলেন জীবনে মরণে বঙ্গবন্ধুর সহচর।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন