৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৮:৫০

আসামে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং বঙ্গবন্ধু গার্ডেনের উদ্বোধন

দীপক দেবনাথ, কলকাতা :

আসামে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং বঙ্গবন্ধু গার্ডেনের উদ্বোধন

ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচরে অবস্থিত ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি) এর ড. এ পি জে আব্দুল কালাম লার্নিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টারে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এবং লাইব্রেরি প্রাঙ্গনে বঙ্গবন্ধু গার্ডেন উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার সকালের দিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, এমপি এবং এনআইটি শিলচরের ডাইরেক্টর প্রফেসর রজত গুপ্ত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু গার্ডেন’ উদ্বোধন করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান। 

শিলচরের এনআইটি সেন্টারে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং বঙ্গবন্ধু গার্ডেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভূপেন হাজারিকা অডিটরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোমেন বঙ্গবন্ধু কর্নার গড়ে তোলার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ভারত সরকারের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ডিজিটাল লাইব্রেরিতে মুজিব কর্নার স্থাপন করায় এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের সংগ্রাম, তাঁর আদর্শ ও স্বপ্ন সম্পর্কে আরো বেশি জানার সুযোগ সৃষ্টি হলো। একইসাথে তারা বাংলাদেশের দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস এবং ভারত সরকার কীভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে সেগুলোও জানতে পারবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিমত, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে যে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে, সেসব তথ্যও তারা জানার সুযোগ পাবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের উভয় দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ভাষা মোটামুটি একইরকম। সেদিক থেকে আমাদের নাড়ির বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে। আমরা ধর্ম, বর্ণ, সংস্কৃতি ও গোষ্ঠী সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকে মানুষ হচ্ছে সব থেকে বড়- এতে আমরা বিশ্বাস করি। মানুষে মানুষে সুসম্পর্ক থাকলে কোন কিছু আর আমাদের মাঝে বাধা হয়ে থাকবে না। আর বঙ্গবন্ধু কর্নার আমাদের সেই প্রত্যাশা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

এনআইটি, শিলচরে স্থাপিত মুজিব কর্নারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন তার লিখিত ও সম্পাদিত বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন বিষয়ক কিছু বই উপহার দেন। মুজিব গার্ডেন উদ্বোধনের পর সেখানে তিনি গাছের চারাও রোপন করেন।

উদ্বোধনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহিবুর রহমান মানিক, এমপি, ইকবালুর রহিম, এমপি, গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, এমপি, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, এনআইটি শিলচরের শিক্ষকমণ্ডলী, সিলেটের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা। উপস্থিত ছিলেন এনআইটি শিলচরে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীবৃন্দও। 

উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো আয়োজিত দুই দিনের এই শিলচর-সিলেট উৎসবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করছে। প্রতিনিধি দল শুক্রবার সকালে সড়ক পথে সিলেটের শেওলা সীমান্ত দিয়ে ভারতের সুতারকান্দি আইসিপিতে পৌঁছলে সেখানে ভারতের বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাগত জানান। পরে সেখান থেকে তারা আসামের শিলচরে পৌঁছেন। 

এর আগে আসামের কাছাড় জেলার শিলচর পুলিশ গ্রাউন্ডে আয়োজিত দু’দিন ব্যাপী শিলচর-সিলেট উৎসবের প্রথমদিন শুক্রবার সন্ধ্যায়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

ওই অনুষ্ঠানের উপস্থিত থেকে ভারতের সাথে বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সাথে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেন, ভৌগলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থান, ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক বন্ধন, ভাষা, শিল্প-সাহিত্য, রন্ধন ঐতিহ্য ও দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের মতো বহুবিধ কারণে দু’দেশের সুসম্পর্ক পর্যায়ক্রমে আরো সুদৃঢ় হচ্ছে।

ওই অনুষ্ঠানে অপর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত সরকারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংস্কৃতি, পর্যটন ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আসাম সরকারের আবগারি ও মৎস্য মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, পরিবহন মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারী এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মিজোরামের রাজ্যপাল কাম্বাপতি হরি বাবু ও শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায় প্রমুখ। 

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর