বিশিষ্ট সমাজসেবক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক শেখ-এর ২১তম প্রয়াণবার্ষিকী শুক্রবার (১০ মার্চ)। এ উপলক্ষে তার এলাকা মুকসুদপুরে মুনিরকান্দি আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা, খানপুরা রাজ্জাকিয়া এতিমখানা ও কওমি মাদ্রাসা এবং পূর্ব নওখন্ডা আলিয়া মাদ্রাসা ও হেফজখানা ও এতিমখানায় দিনব্যাপী কোরআন খতম এবং দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
তার গ্রামের বাড়ি গোহালায় শুক্রবার বাদ আসর ও ঢাকার বাসায় বাদ মাগরিব মিলাদ, দোয়া, কোরআন খতম-এর আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বাদ জুম্মা এলাকার বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ খালেক শেখ এর আত্মার শান্তির জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা করেছেন।
গোপালগঞ্জের এই কৃতি সন্তান জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ অনুসারী এম.এ খালেক শেখ মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস পরিবারসহ প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুঝুঁকি মাথায় নিয়ে কাটান। পাকিস্তান মিলিটারি একাধিকবার তাদের বাড়িঘর লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেয়। তার আপন দুই ভাই এবং দুই ভাগ্নে যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।
যুদ্ধের প্রারম্ভে বঙ্গবন্ধুর এই অকুতোভয় অনুসারী গ্রামের বাড়ি মুকসুদপুরের গোহালা টি.সি.এ.এল. উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে রাতে রাতে স্থানীয় যুবকদের আড়াই হাত বাঁশের লাঠি তৈরি করে যুদ্ধের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ভারতের বিভিন্ন ট্রেইনিং ক্যাম্পে পাঠাতেন। পাকিস্তানী মিলিটারি বাহিনী তার শিরচ্ছেদের জন্য ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারী করে। এলাকার হাটে বাজারে ঢোল পিটিয়ে তাঁকে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় জনসাধারণকে ধরিয়ে দিতে বলা হয়।
তিনি দিগনগর সম্মুখযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ঐ অঞ্চলের একজন সৎ, বিনয়ী, পরোপকারী এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি। স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, সঙ্ঘসহ নানা শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযুক্ত ছিলেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর সাবেক পরিচালক আশরাফুল আলম পপলু তার ৩য় পুত্র। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রীসহ ৫ পুত্র এবং ১ কন্যা সন্তান, আত্মীয় স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। ২০০২ সালের ১০ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনানী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।