রাজধানীর খিলক্ষেতে সড়ক দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ তিনজন নিহতের ঘটনায় গ্রেফতার গাড়ি চালক নাবিল আল দীন বিশাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। দুর্ঘটনার সময় তিনিসহ আরেকজন গাড়িতে ছিলেন। তিনি হলেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সাদ্দাম।
বিশাল পুলিশকে বলেছেন, ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িটি তিনি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু ব্রেক কন্ট্রোল করতে না পেরে এ দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ২৭ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে খিলক্ষেতের ৩০০ ফিট এলাকা থেকে গাড়ির মালিক সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী এম সাইফুল্লাহ ওরফে মুন্না ও ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সাদ্দামকে নিয়ে বের হন চালক বিশাল। গাড়ির মালিক মুন্নাকে নিকুঞ্জ-২ এর অফিসে নামিয়ে দিয়ে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সাদ্দামকে নিয়ে বের হন চালক বিশাল। তিনি নিকুঞ্জ ১৩ নম্বর রোড দিয়ে বের হয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উঠেন। গাড়ি নিয়ে হোটেল লা মেরিডিয়ান পার হয়ে ইউটার্ন করে ফের খিলক্ষেতের দিকে আসতে থাকেন। গাড়িটি নিয়ে ভাটারা এলাকায় যাওয়ার কথা ছিল বলে জানিয়েছেন বিশাল। কিন্তু এর আগেই রাত পৌনে ৯টার দিকে খিলক্ষেত বাস স্টপেজের যাত্রী ছাউনিতে দুর্ঘটনা ঘটান। এতে আমরিনা হক (৩৪), মো. ইয়াছিন (৮) ও উজ্জ্বল পান্ডে (২৮) নিহত হন। এ ঘটনায় সুমন ও রিয়ান নামে আরও দুই পথচারী আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে সুমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত বাস স্টপেজের যাত্রী ছাউনিতে একটি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইয়াছিন নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আহত হন ৪ জন। পরে তাদের রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উজ্জ্বল পান্ডে ও আমরিনা বেগম নামে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর গাড়ি চালক বিশাল পালিয়ে যান। পরে গাড়িটি জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত আমরিনা হকের স্বামী এস.এম রেজাউল হক বাদী হয়ে খিলক্ষেত থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করেন। পরে ওই মামলাটি তদন্ত শুরু করেন খিলক্ষেত থানার এসআই নাজিম উদ্দিন।
এসআই নাজিম উদ্দিন বলেন, ২৮ ডিসেম্বর খিলক্ষেতের ৩০০ ফিট এলাকা থেকে গাড়ি চালক বিশালকে গ্রেফতার করা হয়। ওইদিনই তার ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ৩০ ডিসেম্বর বিশাল আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বিশাল জানিয়েছেন, তিনি ব্রেক কন্ট্রোল করতে না পেরে এ দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন। দুর্ঘটনার সময় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি সাদ্দাম গাড়িতে ছিলেন। তবে দুর্ঘটনায় কবলিত গাড়ির মালিক সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী এম সাইফুল্লাহ ওরফে মুন্না গাড়িতে ছিলেন না। তিনি ঘটনার সময় নিকুঞ্জ অফিসে ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত